সভাধিপতির বাংলোয় এডিসের লার্ভা

এ বার এডিসের লার্ভা পাওয়া গেল পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতির বাংলোয় জমা জলে। যা দেখে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ২৩:৪৬
Share:

পর্যবেক্ষণ: জমা জলে মশার লার্ভার খোঁজে। নিজস্ব চিত্র

জমা জলে গিজগিজ করছে ডেঙ্গির জন্য দায়ী এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা! এত দিন গৃহস্থের বাড়িতে, নির্মীয়মাণ আবাসনে কিংবা নালায় ওই লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। এ বার এডিসের লার্ভা পাওয়া গেল পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতির বাংলোয় জমা জলে। যা দেখে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র জানান, সভাধিপতির বাংলোতে ‘রুটিন ভিজিট’ করা হয়েছিল। দেখা যায় যেখানেই জল জমে রয়েছে, সেখানেই এডিস মশার লার্ভা গিজগিজ করছে। চৌবাচ্চার জল থেকে টব, ফাঁকা কৌটো সর্বত্র জমা জলে এডিসের লার্ভা মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি জেলা পরিষদ ও পুরসভাকে জানিয়েছি।’’

জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলোতে কয়েকটি জায়গায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আমাকে জানানো হয়েছে। পুরসভারই বিষয়টি দেখার কথা। পুরসভা তা দেখছে।’’জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা নিয়ম করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঢুঁ মারছেন। সে ভাবেই কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা রাঁচী রোডে সভাধিপতির বাংলোতেও যান। জানা গিয়েছে, বাংলোর আনাচকানাচে ঘুরে আক্ষরিক অর্থেই তাঁদের চোখ কপালে ওঠে তাঁদের। বাংলোর এক পাশে নির্মাণ কাজ চলছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আধিকারিকেরা দেখেন নির্মাণস্থলে চৌবাচ্চার জমা জলে গিজগিজ করছে এডিস মশার লার্ভা। শুধু চৌবাচ্চার জমা জলেই নয়, যেখানেই বৃষ্টির জল জমে রয়েছে, সেখানেই লার্ভার অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন আধিকারিকেরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গ বিশারদ সঙ্কর্ষণ রায় বলেন, ‘‘সভাধিপতির বাংলোর যে ক’টি জায়গা আমরা দেখেছি, সর্বত্রই এডিস মশার লার্ভা খুঁজে পেয়েছি। এমনকি, নির্মীয়মাণ পিলারের গর্তে যেটুকু জল জমেছে, সেখানেও এডিস মশার লার্ভা জন্মে গিয়েছে।’’

তিনি জানান, এডিস মশা ডিম পাড়ার জন্য পরিষ্কার জলই বেছে নেয়। দিন দশেক যদি ওই জলে ডিম থেকে যায়, তবে পূর্ণাঙ্গ মশা পরিণত হয়। তাই মশা তৈরির আগেই ওই জল ফেলে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের চিঠি পাওয়ার পরেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের কর্মীরা ওই বাংলো-সহ আশপাশের এলাকায় মশানাশক ওষুধ ছড়িয়েছেন। নিকাশি নালা সাফাইও করা হয়েছে।’’

অন্য দিকে, পুরুলিয়া শহরে ফের ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে এক জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। এ বার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আরও চার ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্তদের মধ্যে তিন জনই স্কুলছাত্রী। তাদের সকলেরই বাড়ি ওই এলাকার আশু সহিস লেনে। অন্য জনের বাড়ি দেশবন্ধু রোড বাই লেনে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মহামারি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া জানান, ওই এলাকার অন্য বাড়িতে যাঁরা জ্বরে আক্রান্ত তাঁদের সকলেরই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা চলছে। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক করা হয়েছে। কোনও ছাত্রী যদি জ্বরে আক্রান্ত হয়, তা হলে দ্রুত স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন