বিধানসভা ভোটে পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে দলের বিপর্যয় নিয়ে প্রকাশিত বিতর্কিত প্রচারপত্র এবার সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করলেন দলেরই এক জেলা নেতা। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই প্রচারপত্রটি পোস্ট করা হয়। দলের তরফে জেলা কোর কমিটির সদস্য নবেন্দু মাহালি প্রচারপত্রটি পোস্ট করে বিভিন্ন জনের মতামত চান। তিনি দলের জনসংযোগ সম্পর্কিত এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচারপত্রটি পোস্ট করে জানিয়েছেন, এই প্রচারপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশক, প্রেস (মুদ্রক) বা কোনও তৃণমূল কর্মীর নাম নেই। যাই হোক আপনাদের মতামত জানান।
পুরুলিয়া কেন্দ্রের পরাজয়ের জন্য প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ থেকে দলের জেলা সভাপতির এই কেন্দ্র সম্পর্কে আন্তরিকতা-সহ তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো বেশ কিছু মন্তব্য করা হয়েছে। তৃণমূলেরই সক্রিয় কর্মীদের নামে ওই প্রচারপত্রটি ছড়ানো হয়। কারা এর নেপথ্যে এই নিয়ে রহস্য তৈরি হয়। জোর চর্চা শুরু হয় তৃণমূলের অন্দরে। দলের পুরুলিয়া শহরের নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতারা বুধবার এ নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি। সবাই এড়িয়ে যান। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দলের জনসংযোগ সম্পর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচারপত্রের ছবি নবেন্দুবাবু পোস্ট করে দেন।
এর পরেই নতুন করে ওই পোস্টকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। কেন তিনি এমন করলেন, তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন অনেকে। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যেও এ নিয়ে এ দিন গুঞ্জন শুরু হয়। কারণ ওই প্রচারপত্রে দলের জেলা সভাপতি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছে। আর সেই প্রচারপত্রই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অন্যান্যদের মতামত চাইছেন জেলা সভাপতিরই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নবেন্দুবাবু!
নবেন্দুবাবুর ব্যাখ্যা, পুরুলিয়া কেন্দ্রে দলের কেন বিপর্যয় হয়েছে, এই নিয়ে কিছু কারণ দেখিয়ে একটি প্রচারপত্র প্রকাশ্যে এসেছে। তবে দলের তরফে কে বা কারা এই প্রচারপত্রটি প্রকাশ করেছে বা কোথা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার কোনও উল্লেখ নেই। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক যাতে বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, সেই কারণেই তিনি এই প্রচারপত্রটির ছবি জনসংযোগ সম্পর্কিত গ্রুপে পোস্ট করেছেন। তারপর এই প্রচারপত্রটি সম্পর্কে মতামত জানাতে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রচারপত্রটি কারও হাতে পৌঁছবে, কারও হাতে পৌঁছবে না, তাতে বিভ্রান্তি বাড়তে পারে। এই গ্রুপ তো সবাই দেখেন। ফলে এই প্রচারপত্র দেখে আমাদের অন্য নেতারা বা কর্মীরা মতামত দিতে পারেন। কী লেখা হয়েছে তাও স্পষ্ট ভাবে জানতে পারবেন।’’
তবে এই প্রচারপত্র দলের তরফে জনসংযোগ সম্পর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছে জেনে অবাক দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘আমার ঘটনাটি জানা নেই। তবে এই প্রচারপত্রে কোনও প্রকাশকের নাম নেই। অযথা বিতর্ক তৈরি করতে এই ধরনের প্রচারপত্র সিপিএমও তো বের করতে পারে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপ বলেন, ‘‘আমরা কেন তৃণমূলের নাম ব্যবহার করে প্রচারপত্র বের করব? আমরা আমাদের পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করতে পারি। তৃণমূলের পরাজয়ের কারণ কেন বিশ্লেষণ করতে যাব?’’