বাঁকুড়া সদর থানায় আটক সেই গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
শাসকদলের বিরুদ্ধে পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে ধর্মঘটের সমর্থনে গাড়িতে মাইক বেঁধে প্রচারে বেড়িয়েছিলেন বামকর্মীরা। কিন্তু পুলিশ গিয়ে সেই গাড়ি আটক করে থানায় ঢুকিয়ে দিল। বুধবার বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে বামকর্মীরা থানায় জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করেন। শেষে পুলিশ ওই গাড়ি ছেড়ে দেয়।
আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডা়ক দিয়েছে বামপন্থী দলগুলি ও বিজেপি। তৃণমূলও ওই ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের এই ভূমিকা নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল শহরে। বাঁকুড়ায় কেন এ ভাবে বামেদের প্রচার গাড়ি আটক করা হল, কেনই বা ছেড়ে দেওয়া হল তার সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। জেলাপুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার শুধু বলেন, “জোর করে কাউকে ধর্মঘটে সামিল করা বা উৎসাহিত করায় নিষেধাজ্ঞা আছে। তাই ওই প্রচার গাড়ি আটক করা হয়েছিল।”
বুধবার দুপুরে একটি গাড়িতে দু’টি মাইক বেঁধে রাস্তায় প্রচার চালাচ্ছিল বামেরা। খবর পেয়েই বাঁকুড়া স্টেশনের সামনে পুলিশ গিয়ে গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বাঁকুড়া থানার পুলিশের দাবি, এ ভাবে প্রচার চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি বামেরা। ঘটনার প্রতিবাদে থানায় এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বামকর্মীরা। সিপিএমের বাঁকুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রতীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “লটারির প্রচারে, বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করতে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা যাত্রাপালার প্রচারে প্রতিদিনই গাড়িতে করে মাইকে প্রচার করতে দেখা যায় শহরের আনাচে কানাচে। সে ক্ষেত্রেও তো কোনও অনুমতি থাকে না। পুলিশ কি তখন তাদের গাড়ি আটক করে?’’ তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের চাপে পড়েই এই কাজ করেছে পুলিশ। ধর্মঘটের সমর্থনে আমরা প্রচার চালাচ্ছিলাম বলেই এ ভাবে আমাদের হেনস্থা করা হল। নোংরা রাজনীতিতে নেমে পুলিশকে ব্যবহার করছে শাসকদল।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ দাবি করেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। আমরা কোনও দিনই পুলিশ ও প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করি না। এক সময় বামেরা ও সব করত।”
এ দিন ধর্মঘট বিফল করতে পাল্টা পথে নামে তৃণমূলও। বিকেলে বাঁকুড়া শহরে একটি মিছিল করে শহর পরিক্রমা করে তৃণমূল। যার নেতৃত্বে ছিলেন অরূপবাবু, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকে। অন্য দিকে, ছাতনাতেও ধর্মঘটের প্রচারে মিছিল করে বিজেপি। বেলিয়াতোড়ে পথসভা করে সিপিএম।