সাজা শোনার পরে সদানন্দবাবুর বৌমা কল্পনা দাস (বাচ্চা কোলে) ও মেয়ে মানসী। নিজস্ব চিত্র।
সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে সব্জি কাটার বঁটি দিয়ে গলা কেটে বাবাকে খুনের দায়ে ছেলে-বৌমা এবং মেয়ে-জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বুধবার রামপুরহাট অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আশিস হাজরা ওই সাজা শোনান।
সরকারি কৌঁসুলি উৎপল মুখোপাধ্যায় জানান, ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে নিজের বাড়িতে খুন হন সদানন্দ দাস কবিরাজ (৫২)। পরদিন বাথরুম থেকে তাঁর গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ কর্তা জানান, গোটা ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে সাজাতে চেয়েছিল অভিযুক্তেরা। বাথরুমের দেওয়ালে রক্ত দিয়ে লেখা ছিল— ‘আমাকে পুঁতে গয়া দিও।’ শুরুতে সেখানেই খটকা লাগে পুলিশের। পরে আরও দু’টি চিঠি জমা দেয় অভিযুক্তেরা। পরে ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা যায়, সবটাই সাজানো!
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম থেকেই সন্দেহের তালিকায় ছিল সদানন্দবাবুর ছেলে তাপস এবং জামাই উত্তম দাস। পরে মৃতের ভাই দুলাল দাস কবিরাজের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারী এক পুলিশ কর্তার দাবি, এরপরেই জট খুলতে শুরু করে। জেরায় ধৃতেরা খুনের কথা কবুল করে। আরও জানায়, খুনের সময়ে সহযোগিতা করেছে সদানন্দবাবুর মেয়ে মানসী এবং বৌমা কল্পনা। পুলিশ ধরে তাদেরও। পরে পাশের ইটাগোরিয়া পুকুর থেকে উদ্ধার হয় খুনে ব্যবহৃত বঁটিটিও।
আদালতে সওয়াল-জবাবে পড়শিরা জানান, ঘটনার দিন রাত ন’টা নাগাদ এক সঙ্গে মেয়ে-জামাই এবং ছেলে-বৌমাকে সদানন্দবাবুর বাড়িতে আসতে দেখেছিলেন তাঁরা। ‘‘সব সাক্ষ্যপ্রমাণ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থাকায় তাদের যাবজ্জীবন সাজা শোনান বিচারক’’— বলছেন সরকারি কৌঁসুলি উৎপলবাবু। ঘটনার পরে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ভাই দুলাল দাস কবিরাজ। এ দিনের রায়ে তিনি খুশি বলে জানিয়েছেন।