দুধকুমারকে সামনে রেখে ঐক্যের বার্তা

বিজেপি নেতারা বলছেন, দুধকুমার মণ্ডল যদি ‘গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে’ উঠতে পারেন, মিলিত ভাবে সকলকে নিয়ে চলেন, তাহলে যুযুধান তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ে নামতে পারবে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

কৌশল: রামকৃষ্ণ সভাগৃহে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

বীরভূম লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণার পরে তিন দিন পেরিয়েছে। কে প্রার্থী হলেন তা নিয়ে আকচা-আকচি ছেড়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলতে চাইছে জেলা বিজেপি।

Advertisement

বিজেপি নেতারা বলছেন, দুধকুমার মণ্ডল যদি ‘গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে’ উঠতে পারেন, মিলিত ভাবে সকলকে নিয়ে চলেন, তাহলে যুযুধান তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ে নামতে পারবে বিজেপি। দল সূত্রের খবর, ইতিবাচক দুধকুমার মণ্ডলও। সেই কারণে যেখানে যেটুকু বিরোধ রয়েছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সেগুলি মিটিয়ে একসঙ্গে পথ চলার চেষ্টাই করছেন জেলা নেতৃত্ব।

গোষ্ঠী বিবাদ ছেড়ে একজোট হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে দুধকুমার মণ্ডলের বিরোধী শিবির বলে পরিচিত বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কথাতেও। তিনি বলেন, ‘‘যদি কোথাও কারও কোনও ক্ষোভ বা অভিমান থেকে থাকে, জেলা সভাপতি হিসেবে সেটা দূর করার দায়িত্ব আমার।’’ অন্য দিকে, দুধকুমার বলেন, ‘‘কোনও বিরোধ নেই। সবাই একসঙ্গে আছি। আমিই জিতব।’’

Advertisement

শুক্রবারের পরে ফের রবিবার সকালে সিউড়ির বুথ কমিটির নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দুধকুমার। শহরের রামকৃষ্ণ সভাগৃহে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে কর্মীদের মধ্যেও ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা নজরে পড়ে। আগের দিনের মতো নিজেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এ দিন শোনা যায়নি। সভা পরিচালনা করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিজেপি সূত্রের খবর, রীতিমিত সমীক্ষার ভিত্তিতেই লোকসভায় প্রার্থী নির্বাচনে দুধকুমরারের নাম বাছা হয়েছে। বীরভূমে যে ঘরানার রাজনীতি হয়, সেখানে দুধকুমার মণ্ডলকেই ‘উপযুক্ত’ বলে মনে করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমন একটা পরিস্থিতিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ পাওয়া মানে শীর্ষ নেতৃত্বের বিপক্ষে যাওয়া তা বেশ বুঝেছেন সকলেই। বীরভূমের বিজেপি নেতাদের কথায়, দলের পুরনো কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও ডাকাবুকো নেতা হিসেবে দুধকুমারের জনপ্রিয়তা আছে। তাঁর সঙ্গে দলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধ কারও অজানা নয়। কিন্তু বিধানসভা বা পঞ্চায়েত যাই হোক, লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দানে কোনও রকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না শীর্ষ নেতৃত্ব সাফ জানিয়ে দেওয়ায় একজোট হওয়ার বিষয়ে সক্রিয় হয়েছেন নেতারা। কর্মীদেরও সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। শাসকদলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেওয়াল লিখনও জোর কদমে শুরু করেছে বিজেপি। দলের কিছু কর্মী অবশ্য প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে বোলপুরে হেভিওয়েট প্রার্থী চেয়েছিলেন সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেওয়ার জন্য। কিন্তু দল দুধকুমারকে ঠিক করায় প্রথমে কয়েকজন উষ্মা প্রকাশ করলেও এ দিনের বৈঠকের পরে মেনে নিয়েছেন। শুরু হয়েছে প্রচারও। তাঁর পাশে সকলে আছে বুঝতে পেরে অনেকটা স্বস্তিতে প্রার্থীও। আগের মতোই আক্রমণাত্মকও। বৈতৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতের নকুলদানা নিয়ে কটাক্ষ করেন দুধকুমার। তিনি বলেন, ‘‘নকুলদানা তিনি (অনুব্রত ) কাকে খাওয়াবেন, নাকি কমিশনের নকুলদানা তাঁকে খেতে হয় তার জন্য অপেক্ষা করুন।’’ এখানেই না থেমে দুধকুমার বলেন, ‘‘ভিন্ন পথে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, বিপক্ষ থেকে আক্রমণ হলে প্রতিরোধ করা হবে। মার খেলে জগাই মাধাইয়ের মতো হাত তুলে পিঠ পেতে দাঁড়িয়ে থাকব না। নির্বাচন কমিশন তো আছেই।’’ দুধকুমারের বক্তব্য নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য এ দিন পাওয়া যায় নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন