মুইঠা থেকে কচি পাঁঠায় মহাভোজ

অষ্টমীতে থাকবে লুচি, ছোলার ডাল, ফুলকপি-আলুর সবজি, ছানার ডালনা, পায়েস, দই, মিষ্টি। নবমী এবং দশমীতে ‘মিটবল’, শাকভাজা, নারকেলের দুধ দিয়ে চিংড়ি এবং মাংস থাকছে মেনুতে। দাম গড়ে তিনশো টাকার মধ্যে।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১৬
Share:

পুরুলিয়ার একটি রেস্তোরাঁ। নিজস্ব চিত্র

মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখার সময় বার করতে অনেকেই পুজোয় রান্নাঘরমুখো হন না। তাঁদের কথা মাথায় রেখে এ বার নানা স্বাদের নানা পদ নিয়ে হাজির হয়েছে পুরুলিয়ার নানা রেস্তোরাঁ।

Advertisement

জেলা সদরে সাহেববাঁধের ধারে, ইস্ট লেক রোডের একটি রেস্তোরাঁ পুজোর চার দিনই আয়োজন করেছে মধ্যাহ্ণভোজের। সপ্তমীতে লক্ষ্মীভোগ চালের ভাত, গন্ধরাজ লেবু, বড়ি ভাজা, আলু-পটল-বেগুনভাজা, সোনা মুগের ডাল, হিঙের কচুরি, ফুলকপির তরকারি, লাউ-পোস্ত, মুরগির মাংস, চারাপোনার ঝাল, রাজভোগ, দই, পাঁপড়, চাটনি ও পান—এই থালির জন্য পাঁচশো টাকা।

অষ্টমীতে পুরোপুরি নিরামিষ। হিঙের কচুরি পর্যন্ত সব পদই থাকবে। সঙ্গে শুক্তো ও আলু-পোস্ত। দাম সাড়ে চারশো টাকা। নবমীতে হিঙের কচুরির বদলে রাধাবল্লভি, সঙ্গে কচুর লতি, পাঁচমিশালি তরকারি, কচি পাঁঠার মাংস, পাবদার ঝাল বা চিতলের মুইঠা। খরচ সাড়ে পাঁচশো টাকা। দশমীতে রাধাবল্লভির বদলে কচুরি, নারকেল পোস্ত, মোচার ঘণ্ট, খাসির মাংস, সর্ষে ইলিশ। পড়বে ছ’শো টাকা। ওই রেস্তোরাঁর পক্ষে রোহিত লাটার আশ্বাস, ‘‘পুজোর কথা মাথায় রেখে রান্নায় বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

ওই এলাকারই আর একটি রেস্তোরাঁর মালিক অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় বিশ্বাস জানান, সপ্তমীতে বাঙালি ঘরানায় বাঁশকাঠি চালের ভাত, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, মাছের তেলকাঁটা দিয়ে চচ্চড়ি, ইলিশ ভাপা, গলদা চিংড়ির মালাইকারি, ছোট মাছের চাটনি, পাঁপড় থাকবে তাঁদের মেনুতে। অষ্টমীতে থাকবে লুচি, ছোলার ডাল, ফুলকপি-আলুর সবজি, ছানার ডালনা, পায়েস, দই, মিষ্টি। নবমী এবং দশমীতে ‘মিটবল’, শাকভাজা, নারকেলের দুধ দিয়ে চিংড়ি এবং মাংস থাকছে মেনুতে। দাম গড়ে তিনশো টাকার মধ্যে। শেষ মুহূর্তে অবশ্য মেনুতে সামান্য রদবদল হতে পারে।

শহরের দেশবন্ধু রোডে শপিংমল লাগোয়া একটি হোটেল কর্তৃপক্ষ পুজোর সময় যাঁরা নবরাত্রি পালন করেন তাঁদের রসনার কথা মাথায় রেখে আদ্যন্ত নিরামিষ পদ দিয়ে তাঁদের থালি সাজিয়েছেন। গ্রিন স্যালাড, পনির পকোড়া, নারকেল দিয়ে ছোলার ডাল, কড়াইশুঁটির কচুরি, মিক্সড রায়তা, মালাই কোফতা, রাজনন্দিনী পোলাও, পাঁপড়, চাটনি, মিষ্টি দইয়ের মতো পদ দিয়ে ন’দিন ধরে এই ‘নবরাত্রি থালি’ মিলবে। খরচ তিনশো টাকা।

পুজোয় তাঁরা ‘মহাভোজের’ আয়োজনও রেখেছেন। লুচি, ডাল, স্যালাড, বেগুনি, আলুর দম, রুইয়ের কালিয়া, কষা মুরগি, পাঁপড়, চাটনি এবং লেবুর শরবত। এই থালির দাম ২৫৯ টাকা। শহরের আরও কয়েকটি রেস্তোরাঁতেও পুজোর দিনগুলিতে আয়োজন থাকছে বিশেষ থালির।

শহরের বাইরে নজরকাড়া বা ঐতিহ্যের পুজো দেখতে জেলার রঘুনাথপুর, নিতুড়িয়া, কাশীপুর রাজবাড়িতেও যান অনেকে। রঘুনাথপুর কাছারি মোড় লাগোয়া বাঁকুড়া যাওয়ার রাস্তায় একটি রেস্তোরাঁও আয়োজন করেছে মধ্যাহ্নভোজের।

তাদের তরফে সুরজিৎ ঘোষ জানালেন, মেনুতে থাকার কথা স্যালাড, বাসমতি চালের ভাত, মুগের ডাল, ঝুরি আলুভাজা, পোস্তর বড়া, পাঁচমিশালি তরকারি, পটলের দোলমা, আলু-পোস্ত, শুক্তো, ভাপা ইলিশ, মটর পনির, ভেটকির পাতুড়ি, মশলা পমফ্রেট, চিংড়ির মালাইকারি, পাবদা মশলা, খাসি ও মুরগির মাংস, চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি দই, মিষ্টি, আইসক্রিম ও পান। এই পদগুলি বিভিন্ন থালিতে ভাগ করে রয়েছে। দাম পড়বে আড়াইশো থেকে চারশো কুড়ি টাকা।

রেল-শহর আদ্রার হাতিপার্ক লাগোয়া একটি রেস্তোরাঁর কর্ণধার বিষ্ণু গরাঁই জানালেন, পুজোর দুপুরে ‘কন্টিনেন্টাল’ পদের পাশাপাশি আয়োজন থাকছে নিরামিষ এবং আমিষ থালির। দাম পড়বে দেড়শো থেকে আড়াইশো টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন