ফাইল চিত্র।
চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিশ্বভারতীতে চালু হচ্ছে ‘ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্সেস’ (এমওওসি-এস)। এটি কেন্দ্রের ‘স্বয়ম’-এর একটি প্রকল্প। স্নাতকে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এই কোর্স। এমওওসি-এস চালুর ফলে এ বার আইআইটি, এনআইটির কোর্সও বিশ্বভারতী থেকেই করতে পারবেন পড়ুয়ারা।
কী এই এমওওসি-এস?
এটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর অন্তর্গত ‘স্বয়ম’-এর একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পে দেশের প্রথম সারির কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলিতে সব থেকে ভাল মানের কিংবা অন্য রকম যে বিষয়গুলি পড়ানো হয়, তাই তারা অনলাইনে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে থাকেন। এ বছরই প্রথম যেহেতু বিশ্বভারতী এই এমওওসি-এস এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, তাই আপাতত অন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে ২৯৮টি কোর্স নির্বাচন করা হয়েছে। এর পরের বছর বিশ্বভারতীও এ রকম কিছু কোর্স তৈরি করবে এবং যেটি অন্য প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারাও পড়তে পারবেন, কর্তৃপক্ষ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
এ বছর প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ২৯৮টি কোর্সের মধ্যে যে কোনও একটি বিষয় নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সেই বিষয়ের নম্বর মূল বিষয়ে পাওয়া নম্বরের সঙ্গে যোগ হবে না। শুধু মার্কশিটে নম্বরের উল্লেখ থাকবে। এ ছাড়াও আলাদা করে এই কোর্স করার জন্য শংসাপত্র পাবেন পড়ুয়ারা। সেই শংসাপত্র েদবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই। প্রথম বর্ষের পাশাপাশি অন্য পড়ুয়ারাও চাইলে এই কোর্স করতে পারেন। তাঁদের ক্ষেত্রে নম্বর যোগ হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। এই শিক্ষাবর্ষের জন্য পাঠ্যক্রমগুলি ‘এক্সট্রা ক্রেডিট কোর্স’ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে আগামী শিক্ষাবর্ষে ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ (সিবিসিএস) এর মধ্যে এই পাঠ্যক্রমগুলি অন্তর্ভূক্ত হবে। সেক্ষেত্রে ঐচ্ছিক (সাবসিডিয়ারি) বিষয় হিসেবে মূল নম্বরের সঙ্গে এই বিষয়গুলিরও নম্বর যুক্ত হবে। এর পরে মূল বিষয়েরও (কোর কোর্স) একটি অংশ এমওওসি-এস থেকে নিতে পারে বিশ্বভারতী।
এমওওসি-এস এর জন্য ইতিমধ্যেই ১০টি স্মার্ট ক্লাস তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যেখান থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাস করা সম্ভব হবে। স্মার্ট ক্লাস তৈরির সমস্ত উপকরণও কেনা হয়ে গিয়েছে। সেগুলির বসানো হয়ে গেলেই ক্লাস শুরুর কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। এ বছর যেহেতু এমওওসি-এস নতুন, তাই বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়াদের জানাতে প্রতিটি বিভাগে এক জন করে এমওওসি-এস কো-অর্ডিনেটর রাখা হয়েছে। যাঁরা বিষয়টি পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেবেন। বিশ্বভারতী থেকে এনআইটি দুর্গাপুরের ডিরেক্টর অনুপম বসুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে আরও স্পষ্ট করে জানাতে পারবেন বলেই মত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
এমওওসি-এস চালুর ফলে এ বার থেকে পড়ুয়ারা যেমন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলির উৎকৃষ্ট বিষয়গুলি পড়তে পারবেন। একই সঙ্গে আইআইটি এবং এনআইটির কোর্সও করতে পারবেন। আবার বিশ্বভারতীর উৎকৃষ্ট বিষয়গুলিও অন্য প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা পড়তে পারবেন পরের বার থেকে। যুগ্ম কর্মসচিব (শিক্ষা ও গবেষণা) তথা এই কোর্সের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘ইউজিসি বরাবরই চাইছিল বিশ্বভারতী এই প্রকল্পে যুক্ত হোক। শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হল।’’ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের কথায়, ‘‘পড়ুয়াদেরও সুবিধা হল। এখানে পড়ার সঙ্গেই দেশের অন্য সেরা প্রতিষ্ঠানের কোর্সও করতে পারবে তারা।’’
কর্মিসভার সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার জানান, শিক্ষার দিক থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাল প্রকল্প। যাঁরা ভাল জায়গা থেকে, ভাল পাঠ্যক্রমে পড়তে চায়, তাঁদের খুব সুবিধে হবে। একই ভাবে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অধ্যাপক সভার সম্পাদক গৌতম সাহা, বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, সম্পাদক বিকাশচন্দ্র গুপ্ত।