ক্ষুদ্রান্তে ফুটো, সফল অস্ত্রোপচার রামপুরহাটে

শল্য চিকিৎসক দেবব্রত দাস জানান, রোগীর টাইফয়েড হলেও দু’সপ্তাহ কোনও চিকিৎসা করেননি। প্রথম দিকে মিঠুনের রক্তচাপ খুবই কম ছিল। পালস্ রেট‌ পাওয়া যাচ্ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০০:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাড়িতে টানা দু’সপ্তাহ জ্বরে ভোগার পরে পেটব্যথা শুরু হয়েছিল। দুই উপসর্গ নিয়ে ২৫ মার্চ দুপুরে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি হন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের তেচুঁড়া গ্রামের ২৯ বছরের মিঠুন কোনাই। শল্য চিকিৎসক দেবব্রত দাস জানান, রোগীর টাইফয়েড হলেও দু’সপ্তাহ কোনও চিকিৎসা করেননি। প্রথম দিকে মিঠুনের রক্তচাপ খুবই কম ছিল। পালস্ রেট‌ পাওয়া যাচ্ছিল না। চিকিৎসকেরা জানান, এই অবস্থায় এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় যুবকের খাদ্যনালীতে কোথাও ফুটো আছে। বর্ধমানে রেফার করার সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, যুবকের শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে, বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পথে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা ছিল। সে কথা পরিজনদের জানানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায়, পরিবার রাজি হলে রামপুরহাটেই অস্ত্রোপচারের তোড়জোড় শুরু হয়। চিকিৎসক দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘পরিবার রাজি হতেই দেরি না করে অ্যানাস্থেটিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু সহ দু’জন নার্সের সহযোগিতায় অস্ত্রোপচার করা হয়। দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করে দেখা যায় ক্ষুদ্রান্তের শেষভাগে একটা বড় ফুটো রয়েছে। ওই ফুটোর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে প্রচুর মল পেটে জমেছে। সেই মল পরিস্কার করে ক্ষুদ্রান্তের পচে যাওয়া অংশ অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয়।’’ এখন মিঠুন সুস্থ বলে দেবব্রতবাবু জানিয়েছেন।

হাসপাতালের সুপার সুবোধকুমার মণ্ডল জানান, টাইফয়েড-আক্রান্ত রোগীরা দীর্ঘ দিন কোনও চিকিৎসা না করলে ‘টারমিনাল ইলিয়াল পারফোরেশন’-এর শিকার হন। তাতেই অনেক সময় খাদ্যনালীর ডিওডিনোলে ফুটো হয়। ক্ষুদ্রান্তের ফুটো খুব একটা পাওয়া যায় না। সুবোধবাবুর কথায়, ‘‘শল্য চিকিৎসক দেবব্রত দাস দ্রুত অস্ত্রোপচার করে খুবই খারাপ অবস্থায় আসা এক রোগীর প্রাণ বাঁচানোর ঝুঁকি নিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।’’

Advertisement

সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে এমন জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য মেলায় চিকিৎসকদের জানিয়েছেন রোগীর পরিজনেরা। মিঠুনের দাদা বাপন কোনাই বলেন, ‘‘প্রথম দিকে জ্বরে ভুগছিল। বুঝতে পারিনি জ্বরের মধ্যেই এত জটিল রোগ হতে পারে। দিনমজুর পরিবার। তার উপরে ভাইয়ের শারীরিক অবস্থাও খারাপ ছিল। চিকিৎসক ঝুঁকি নিয়ে মৃতপ্রায় রোগীকে বাঁচিয়ে তুলেছেন। অজস্র ধন্যবাদ ওঁনাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন