নাইজেরিয়া একাদশ ও অসম রেজিমেন্ট একাদশের ম্যাচের একটি মুহূর্ত। বৃহস্পতিবার মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে সুজিত মাহাতোর তোলা ছবি।
নাইজেরিয়া একাদশ ও অসম রেজিমেন্ট একাদশের প্রদর্শনী ম্যাচকে ঘিরে বৃহস্পতিবার জন্মাষ্টমীর ছুটির বিকেলে ফুটবলের উত্তেজনায় ভাসল পুরুলিয়া।
দীর্ঘদিন মানভূম ক্রীড়া সংস্থায় অচলাবস্থার দরুণ মাঠ বিমুখ ছিলেন শহরের ক্রীড়া প্রেমীরা। এত দিন সংস্থায় অচলাবস্থার জেরে বড়মাপের কোনও খেলা এখানে হচ্ছিল না। সেই ঘাটতিই যেন পুষিয়ে দিল এ দিনের খেলা। এ দিন ক্রীড়াপ্রেমীরা কাতারে কাতারে মাঠ ভরিয়ে দিয়েছিলেন।
মাঠ ভরলেও খেলা দেখে অবশ্য মন ভরেনি দর্শকদের। দু’দলই রক্ষণাত্মক ভাবে খেল শুরু করায় প্রথম দিকে তেমন ভাল আক্রমণাত্মক খেলা দেখতে পাননি দর্শকেরা। প্রথমার্ধের সাত মিনিটে অসম রেজিমেন্টের এক ফরওয়ার্ড সামনে নাইজেরিয়ার গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল মারেন গোলের বাইরে। এর দশ মিনিট পরে নাইজেরিয়ার এক ফরওয়ার্ড বাঁ পায়ের জোরালো শট্ অসম রেজিমেন্টের গোলরক্ষককে পরাস্ত করে গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ম্যাচের ২৪ মিনিটে অসম রেজিমেন্ট প্রথম কর্নার পায়। মিনিট তিনেক পরে নাইজেরিয়া একাদশও পাল্টা কর্নার পায়। কিন্তু কোনও দলই জালে বল জড়াতে পারেনি। প্রথমার্ধের ২২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নাইজেরিয়া ফ্রি কিক পেয়েছিল, কিন্তু সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের ১২ মিনিটের মাথায় অসম একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে। তার মিনিট দুয়েক পরে ফের আরও একটি সুযোগ নষ্ট করে অসম রেজিমেন্ট। দ্বিতীয়ার্ধের ১৬ মিনিটে নাইজেরিয়ার এক খেলোয়াড় গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটের মাথায় সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিল অসম। কিন্তু গোলের সামনে ভিড়ের মধ্যে বল গোলে ঢোকাতে ব্যর্থ হয় অসম। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ গোলশূন্য থাকায় টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় নাইজেরিয়া একাদশ।
প্রথমার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পরেই চোট পান খেলা দেখতে আসা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। সাইড লাইনের ধারে বসেছিলেন তিনি। অসম রেজিমেন্টের এক খেলোয়াড় বলের দখল নিতে গিয়ে মন্ত্রীর উপরেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন। খেলোয়াড়ের বুটের স্পাইকে মন্ত্রীর ডান পায়ে আঘাত লাগে। পাশেই ছিলেন সাংসদ-চিকিৎসক মৃগাঙ্ক মাহাতো। সাংসদের পরামর্শে মন্ত্রী পায়ে ঠান্ডা জল ঢালা হয়। পরে বরফের ব্যাগ এনে পায়ে চেপে রাখা হয়। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, ‘‘গোটাটাই স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের ব্যাপার।’’ মন্ত্রী কিন্তু পুরো ম্যাচই দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য একটু লেগেছে। কিন্তু তেমন কিছু নয়।’’ বিরতিতে পুরুলিয়ার অতি পরিচিত ‘মাঠের মানুষ’ (যিনি মাঠ তৈরি থেকে খেলা সংগঠিত করায় সব বিষয়ে জড়িত থাকেন) প্রৌঢ় গোলক ওরাংকে সংবর্ধনা জানায় ম্যাচের উদ্যোক্তা এস সি সেন রোড দুর্গাপুজো কমিটি।