একেবারে সিনেমার ঢঙে সাত সকালেই মোটরবাইক ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল পুরুলিয়া শহরে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকাল প্রায় সওয়া সাতটা নাগাদ, শহরের ভাগাবাঁধপাড়া এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগাবাঁধপাড়ার বাসিন্দা সত্যনারায়ণ দাঁ এ দিন সকালে মোটরবাইকে পুরুলিয়া স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি পেশায় রেলের মাল গুদামের ঠিকাদার। শনিবার স্টেশনে গম বোঝাই মালগাড়ি এসেছিল। শ্রমিকেরা সেই মাল রেলের রেক থেকে নামানোর কাজ করেছিলেন। সত্যনারায়ণবাবু বলেন, “আমি টাকা নিয়ে শ্রমিকদের মজুরি মেটাতে স্টেশনে যাচ্ছিলাম।” তিনি জানান, বাড়ি থেকে বেরিয়ে শান্তময়ী গার্লস স্কুলের পাশ দিয়ে নামোপাড়ার রাস্তা ধরতেই রাস্তার পাশে থাকা দুই যুবক তাঁর মোটরবাইক আটকায়। তাঁর কথায়, “তখন রাস্তায় লোকজন তেমন ছিল না। আমাকে হাত দেখিয়ে আটকায়। কী বলছে জানতে বাইকের গতি কমাই। সঙ্গে সঙ্গে একজন কাছে এসে বলে, ‘বাইকটা দে’। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, ওরা ভুল করছে। ওদের পরিচয় জানতে চাইতেই একজন আমার মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায়। তার মাঝেই এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে আমার ধ্বস্তাধস্তি হয়। ওই ছেলেটা পড়েও যায়।”
দুষ্কৃতীরা সত্যনারায়ণবাবুর ডান চোখের কাছে আঘাত করলে তাঁর চশমা ভেঙে যায়। তার মাঝেই দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর মোটরবাইক কেড়ে নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। তাঁর দাবি, গাড়ির ডিকিতে শ্রমিকদের মজুরি মেটানোর লক্ষাধিক টাাকা ছিল। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে যান। সাত সকালেই শহরের রাস্তায় এমন ঘটনা ঘটায় অবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, পাশেই মেয়েদের একটি আবাসিক স্কুল রয়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের নজরদারি থাকলে ছিনতাই করে এই এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া শক্ত। কী করে দুষ্কৃতীরা সাত সকালে বাইক আর টাকা লুঠ করে শহরের ভিতর দিয়েই পালিয়ে যেতে সক্ষম হল, সেই প্রশ্নও উঠছে। এলাকার কিছু বাসিন্দা জানান, ভাগাবাঁধপাড়ায় ইদানীং রাতের দিকে অচেনা লোকজনের আনাগোনা বাড়ছে। রাস্তার আলোও কেউ বা কারা ভেঙে দিচ্ছে মাঝেমাঝেই। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার।