বোলপুরে এ বার আইন হাতে নিয়ে গণপিটুনি

এ রোগ কিছুতেই কাটছে না বীরভূমে। রোগের নাম গণপিটুনি। থানা-পুলিশ না করে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে ধরে বেধড়ক পেটানোর ঘটনা বারবারই ঘটছে এই জেলায়। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট বা বোলপুর—সব শহরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:০৪
Share:

এ রোগ কিছুতেই কাটছে না বীরভূমে। রোগের নাম গণপিটুনি। থানা-পুলিশ না করে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে ধরে বেধড়ক পেটানোর ঘটনা বারবারই ঘটছে এই জেলায়। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট বা বোলপুর—সব শহরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

ঠিক যেমন সোমবার ঘটল বোলপুরে। বোলপুরের লায়েকবাজারে সোমবার সকালে পকেটমার সন্দেহ করে এক যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ওই এলাকাতেই কিছুক্ষণ পরে চোর অপবাদে এক যুবককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি পৃথক ঘটনার কোনওটিতেই লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেছেন, ‘‘বোলপুরের ঘটনা আমি জেনেছি। আইন হাতে তুলে নেওয়া কোনও অবস্থাতেই ঠিক নয়। যাঁরা এই কাজ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লায়েকবাজার রুটের বাসে প্রায়ই পকেটমারির ঘটনা ঘটে। রবিবারও এক ছাত্রী দাবি করেন, বাসের মধ্যেই তাঁর ব্যাগ থেকে তিন হাজার টাকা তুলে নিয়েছে পকেটমার। সোমবার সকালেও বাস থেকে টাকা পকেটমারি হয়েছে বলে দাবি করেন এক যাত্রী। তার পরেই পকেটমার সন্দেহে এক যুবককে বাস থেকে নামিয়ে গণপিটুনি দেওয়া হয়। বাঁশ দিয়েও তাঁকে মারা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়।

Advertisement

এই ঘটনারই চর্চা যখন লায়েকবাজারের মোড়ে চলছে, তখনই আরও একটি ঘটনা ঘটে সেখানে। এ বার চোর সন্দেহে মারধর করা হয় এক ব্যক্তিকে। ছুটে পালাতে গিয়ে নর্দমায় পড়ে গিয়ে মাথা ও কানে আঘাত পান ওই ব্যক্তি। তিনিও বোলপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সমীর সাহা নামে এক ব্যক্তির লায়েকবাজার মোড়ে একটি চায়ের দোকান আছে। সমীরবাবুর দাবি, তাঁর দোকানে এর মধ্যেই তিন বার চুরি হয়েছে। গত সপ্তাহে দোকান থেকে চা বানানোর সামগ্রী ও গ্যাসের সিলিন্ডার চুরি হয়। রবিবার রাতে লায়েকবাজারেরই এক যুবকের বাড়ি থেকে রান্নার গ্যাসের একটি সিলিন্ডার, চায়ের ফ্লাস্ক পাওয়া যায়। এলাকাবাসী সন্দেহ করেন, ওই যুবকই সমীরবাবুর চায়ের দোকানে চুরি করেছেন। তখন যুবক বাড়িতে ছিলেন না। সোমবার তাঁকে এলাকায় দেখতে পেয়ে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু হয়। পালাতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। মাথা এবং কানে আঘাত লাগে। আহত যুবকের যদিও দাবি, তাঁর কান কেটে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মারতে গিয়ে কিংবা পড়ে গিয়ে আঘাত লাগার ফলেই তাঁর কান কেটে গিয়েছে। কাটা জায়গায় সেলাই করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন