স্বর্ণ-বিপণিতে চুরি সিউড়িতে

১৮ দিন লজে ছিল ওরা কারা

ঘুম ভাঙা ইস্তক মঙ্গলবার শহরের আলোচনার দখল নিয়েছে কোটি টাকার চুরি।সিউড়ির বাসিন্দারা মনেই করতে পারছেন না, এত বড় চুরির ঘটনা কখনও শুনেছেন কিনা। দেখেছেন, তবে হিন্দি বা ইংরেজি ফিল্মে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৮
Share:

সিঁধ: স্বর্ণ বিপণির শৌচাগারের দেওয়াল এ ভাবেই কেটে ভিতরে ঢোকে চোরেরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

ঘুম ভাঙা ইস্তক মঙ্গলবার শহরের আলোচনার দখল নিয়েছে কোটি টাকার চুরি।

Advertisement

সিউড়ির বাসিন্দারা মনেই করতে পারছেন না, এত বড় চুরির ঘটনা কখনও শুনেছেন কিনা। দেখেছেন, তবে হিন্দি বা ইংরেজি ফিল্মে। কিন্তু, নিজেদের শহরেই এক নামজাদা স্বর্ণ-বিপণিতে স্রেফ সিঁধ কেটে চোরের দল হাতিয়ে নিয়ে যাবে পাঁচ কোটির সোনা-হিরের গয়না (তেমনই দাবি করেছে সংস্থা)—ঘটনার কথা জেনে এখনও ঘোর কাটছে না তাঁদের।

বাসস্ট্যান্ড একটি বহুতলের দোতলায় রয়েছে ওই বিপণি। সিউড়ি শহরের কেন্দ্রস্থল বলা যায় এই এলাকাকে। ওই বহুতলেই রয়েছে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, জীবন বিমা নিগমের অফিস এবং বহুতল মালিকের ওষুধ ও মিষ্টির দোকান। মালিক ওই বহুতলেই থাকেন। স্বর্ণ-বিপণি ছাড়াও ব্যাঙ্কগুলিতে নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তার পরেও কেন কেউ কিছু টের পেলেন না, প্রশ্ন উঠেছে। বহুতলটির মালিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আমি ওই বিপণির ঠিক উপরেই থাকি। অথচ কোনও শব্দই সোমবার রাতে পাইনি। তবে গভীর রাতে আমার অ্যালসেশিয়ান কুকুরটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সে-ও হাঁক ডাক করেনি।’’

Advertisement

বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বেশ কিছু দোকানদাররা বলছিলেন, ‘‘এই এলাকায় রাত ১২টা পর্যন্তও লোকের যাতায়াত। এমন একটা এলাকায় কী ভাবে এত বড় চুরি হয়ে গেল, ভেবে আমরাও অবাক হয়ে যাচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: পুকুর ‘চুরি’, নিশানায় মন্ত্রীর ইএ

পুলিশের অনুমান, অপারেশন চালানোর জন্য লজটিকেই ঢাল করেছিল দুষ্কৃতীরা। লজের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখতে হার্ডডিস্ক নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। ওই লজে দিন কয়েকের জন্য আশ্রয় নেওয়া সন্দেহভাজনদের ফেলে যাওয়া নমুনা পেতে কলকাতা থেকে একটি ফরেন্সিক দল এ দিন সন্ধ্যায় সিউড়ি আসে। স্বর্ণ-বিপণি থেকেও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে তা লজের পাওয়া ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। পুলিশ মনে করছে, অত্যন্ত দক্ষ একটি দল কাজ সেরেছে। বিপণির শৌচাগারের দেওয়াল কাটার জন্য ছেনি-হাতুরির আওয়াজ এড়াতে গামছা এবং কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এক-একটা করে ইট খুলে সেগুলিকে প্লাস্টিকে মুড়ে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা বলেও পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে।

এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা নিশ্চয় একাধিক বার ওই বিপণিতে ঢুকেছিল সব দেখতে। তাই আমরা লজ ও বিপণির সিসিটিভি ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে মেলাবো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন