ডেঙ্গি রুখতে ভরসা সেই গাপ্পিই

মশার লার্ভা ধ্বংস করতে মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরের বেস কিছু জলাশয়ে গাপ্পি মাছ ছাড়ল পুরসভা। মশাবাহিত অন্যান্য রোগের সঙ্গে ডেঙ্গির লার্ভাও ধ্বংস করাও লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৮:২০
Share:

চঞ্চল: পুরুলিয়ার জলাশয়ে ছাড়ার আগে প্যাকেট-বন্দি গাপ্পি। মঙ্গলবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

মশার লার্ভা ধ্বংস করতে মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরের বেস কিছু জলাশয়ে গাপ্পি মাছ ছাড়ল পুরসভা। মশাবাহিত অন্যান্য রোগের সঙ্গে ডেঙ্গির লার্ভাও ধ্বংস করাও লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মরসুমে পুরুলিয়া শহরে ২৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। চলতি বছরে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে জ্বরে আক্রান্তদের সন্ধান মিললেও, এখনও কারও রক্তের নমুনাতে ডেঙ্গির জীবাণুর অস্তিত্ব মেলেনি। সপ্তাহ দুয়েক আগে শুধু পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুড়কু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দোলদাঁড়ি গ্রামে এক মহিলার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুর সন্ধান মিলেছে। জেলায় চলতি মরসুমে এই মহিলাই প্রথম ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, ‘‘কর্মসূত্রে ওই মহিলার পুরুলিয়া শহরে যাতায়াত রয়েছে। কী ভাবে তিনি ডেঙ্গি আক্রান্ত হলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে ওই এলাকায় সমস্ত বাসিন্দাদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কারও রক্তে অবশ্য ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি।’’

তবে সাবধানের মার নেই মনে করে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পুরসভা এ বার প্রথম থেকেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় সতর্ক। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ২৩টি ওয়ার্ডে একাধিক দল ডেঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করছে। তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে জ্বরের সমীক্ষা করছে। সেই সমীক্ষা থেকে উঠে আসা তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পাঠানো হচ্ছে। মাসে দু’দফায় পাঁচ দিন করে এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, এ বারে শহরে জ্বরে অনেকেই অসুস্থ হলেও এখনও কারও রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। কিন্তু, সতর্ক বজায় রাখা হয়েছে।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গ বিশারদ সংকর্ষণ রায় জানান, পুরুলিয়া শহরে একাধিক বদ্ধ জলাশয় রয়েছে, যেখানে নোংরা ও আবর্জনা জমে রয়েছে। এই জলাশয়ের জলও নোংরা, মানুষজন ব্যবহারও করেন না। জলাশয়ে প্লাস্টিকের পাত্র, থার্মোকল ইত্যাদি ভাসছে।

তিনি বলেন, ‘‘গত বার আমরা শহরের এ রকম কয়েকটি জলাশয়ের জলে এডিস মশার লার্ভার খোঁজ পেয়েছিলাম।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মহামারী বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া জানান, এ রকম বদ্ধ ও নোংরা জলাশয় ছাড়াও গতবার বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাঁরা এডিস মশার লার্ভা পেয়েছিলেন। তাই ওই সব জলাশয়ে মশার লার্ভা নষ্ট করার জন্য গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে।

পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের নোডাল অফিসার সুমিত বক্সী জানান, যেহেতু গাপ্পি মাছ মশার লার্ভা খেতে পারে তাই এ বার সুসংহত ভাবে শহরের বিভিন্ন বদ্ধ ও জলাশয়ে এই মাছ ছাড়া হচ্ছে। জলাশয় ছাড়া যে সমস্ত নিচু জমিতে জল জমে রয়েছে, সে রকম জায়গাতেও এই মাছ ছাড়া হয়েছে। এ দিনই শহরের ৫৪টি ছোট-বড় জলাশয়ে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে বলে তিনি জানান। জলাশয়ে মাছ ছাড়ার কাজের তদারক করেন পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার সুদীপ্ত দেবনাথ ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement