Bagtui

মিহিলালের বাড়িতেই ‘মন কি বাত’

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বীরভূম জেলা সাংগঠনিক সভাপতি ধ্রুব সাহা-সহ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রশ্মি দে, সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল ও অন্য নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট  শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪৩
Share:

মিহিলাল শেখের বাড়িতে টিভিতে চলছে ‘মন কি বাত’। নিজস্ব চিত্র

ক’দিন আগে বগটুই-কাণ্ডের বর্ষপূর্তির দিনে তাঁকে দেখা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশে বিজেপির মঞ্চে। রবিবার বগটুইয়ের সেই স্বজনহারা মিহিলাল শেখের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান প্রদর্শনের আয়োজন করল বিজেপি। তিনি যে বিজেপিতে যোগদান করেছেন এ দিন তা স্পষ্ট জানিয়ে মিহিলাল বলেন, ‘‘আমি যে দল স্বচ্ছ সেই দলের সঙ্গে আছি।’’ বীরভূমের তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মিহিলাল শেখ-সহ বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আমাদের সমস্ত জেলা নেতৃত্ব দাঁড়িয়েছিলেন। এখন উনি যা ভাল বুঝেছেন, তা ওঁর দায়িত্ব।’’

Advertisement

বগটুই গ্রামে এ দিন ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বীরভূম জেলা সাংগঠনিক সভাপতি ধ্রুব সাহা-সহ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রশ্মি দে, সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল ও অন্য নেতারা। মিহিলালের বাড়ির উঠোনে টিভি বসিয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছিলেন আর এক স্বজনহারা বানিরুল শেখ, যাঁর বাড়িতে ঢুকতে গিয়েই বাধা পান তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষে মিহিলাল বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশের অগ্রগতি, সাংস্কৃতিক চর্চা, সংস্কৃতির কথা শান্তির বার্তা দেন। একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে এই অনুষ্ঠান প্রত্যেকের শোনা জরুরি বলে আমি মনে করি।’’ এ দিন মিহিলাল অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেই সহানুভূতিকে ধন্যবাদ জানাই।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের কর্মীদের নিয়ে দলীয় বৈঠকে শুক্রবার বগটুই হত্যাকাণ্ডে স্বজনহারা পরিবারদের বিজেপির মঞ্চে থাকা নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারের বাড়িতে এলাকার বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ব্যাপারেও তিনি জানতে চান। বগটুইয়ের ঘটনার পর থেকে রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের পাশে থাকা ও সরকারের তরফে চাকরি-সহ আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হলেও কেন স্বজনহারাদের অনেকে বিজেপির সঙ্গে যাচ্ছেন বীরভূমের নেতাদের থেকে মুখ্যমন্ত্রী তা জানতে চান বলে সূত্রের দাবি। বগটুইয়ে তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি ও বীরভূম জেলা কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখকে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব দেন বলেও দলীয় সূত্রের দাবি।

Advertisement

জেলায় তৃণমূলের একটি সূত্রের আবার দাবি, বগটুইয়ে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার ‘পরিকল্পনা’ অনেক আগেই তৈরি হয়েছিল। দলীয় কর্মীদের একাংশের দাবি, এতে সৈয়দ সিরাজ জিম্মির ভূমিকাও দেখা প্রয়োজন। জিম্মি বলেন, ‘‘দিদির উপস্থিতিতে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। নতুন করে আমার কিছু বলার নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন মিহিলাল। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে নেতা, মন্ত্রী-সহ একে একে নেতারা জেলে যাচ্ছেন। সমস্ত ক্ষেত্রে রাজ্যের অবক্ষয় ঘটার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকারকে ধিক্কার জানাই। আগামী দিনে স্বচ্ছতার পক্ষে মানুষ রায় দেবেন। রাজ্যে দৈনন্দিন যে দুর্নীতি বেরোচ্ছে তাতে মুখ্যমন্ত্রীর আগামী দিনে সজাগ হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন