উৎসবের মরসুমে রামপুরহাট মহকুমায় নিষিদ্ধ হল ডিজে-বক্স। বৃহস্পতিবার এই মর্মে পুজো ও মহরম কমিটিকে জানিয়ে দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। নির্দেশের অন্যথা হলে রয়েছে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি।
তখন রাত আটটা। সবে মাত্র অফিস থেকে ফিরে বাংলোয় পায়চারি করছিলেন মহকুমাশাসক। শুনতে পেলেন বাংলোর গা ঘেঁষে চলে যাওয়া রাস্তা ধরে উচ্চস্বরে বক্স বাজিয়ে কে বা কারা বিশ্বকর্মা ঠাকুর বিসর্জন করছে। রামপুরহাটের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাসের কথায়, ‘‘এত জোর আওয়াজ যেন মনে হল রণভেরি বাজছে।’’ তিনি পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলায় কিছু সময়ের মধ্যেই আওয়াজ স্তিমিত হল।
কিন্তু, উৎসবের মরসুমে এমনটাই তো দস্তুর! উদ্যোক্তারা সাধারণ মানুষের আর্জি উড়িয়ে তারস্বরে মাইক বাজাবেন। কান দেবেন না বয়স্ক মানুষদের অনুরোধ-আপত্তিতেও। সাম্প্রতিক অতীতে প্রতিবাদ করে মারধর তো বটেই প্রাণহানিও হয়েছে। উৎসবের মরসুমে ফি বছর একই ছবি দেখা যায় রামপুরহাটেও। শব্দবাজি থেকে ডিজে— কানফাটানো রকমারি আওয়াজে ঘরে থাকায় দায় হয়। সে সব কথা স্মরণে রেখে মহকুমা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘খুব ভাল পদক্ষেপ। এ বার তা হলে একটু ঘরে থাকতে পারি।’’
বৃহস্পতিবারই মহকুমাশাসক এলাকার মহরম কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে ডিজে-বক্স ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে দেন। এসডিও বলেন, ‘‘মহরম কমিটি এ ব্যাপারে সচেতন থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’ আজ, দুর্গাপুজো সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক রয়েছে প্রশাসনের। সেখানে ডিজে-বক্সের ব্যাপারে নতুন নির্দেশিকা জানিয়ে দেওয়া হবে। এ দিনের সিদ্ধান্ত শুনে এক ভুক্তভোগীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কান ফাটানো শব্দে প্রতিবার জেরবার হই। এ বার ভাগ্যিস মহকুমাশাসকও অতিষ্ট হলেন। নতুন নিয়ম হল। নইলে কী যে হত!’’