Purulia

বাড়ি তৈরিতে কাউকে টাকা নয় জানিয়ে চিঠি

অন্যান্য বার অনেক আগেই জেলায় সরকারি প্রকল্পে কত বাড়ি তৈরি হচ্ছে, তার লক্ষ্যমাত্রা ও বরাদ্দ চলে আসে। এ বার ‘কাটমানি’ বিতর্কের ধাক্কা কাটিয়ে কয়েক মাস দেরিতে এই নির্দেশ এল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

চলতি অর্থবর্ষে জেলায় সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি হবে ৮৩ হাজার ৩৫৬টি— জেলা প্রশাসন সূত্রে এমনই জানানো হয়েছে।

Advertisement

অন্যান্য বার অনেক আগেই জেলায় সরকারি প্রকল্পে কত বাড়ি তৈরি হচ্ছে, তার লক্ষ্যমাত্রা ও বরাদ্দ চলে আসে। এ বার ‘কাটমানি’ বিতর্কের ধাক্কা কাটিয়ে কয়েক মাস দেরিতে এই নির্দেশ এল। নির্দেশ পৌঁছতেই প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আবাস যোজনায় বাড়ি পেতে কাউকে টাকা দিতে হবে না— সে বিষয়ে উপভোক্তাদের সচেতন করতে শিবির এবং বাংলায় লেখা চিঠি বিলি করার ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন ব্লক কতগুলি বাড়ি পাচ্ছে, পঞ্চায়েত ধরে ধরে তার তালিকা পাঠানো হয়েছে সে সব এলাকার বিডিওদের কাছে। এ বার দেরি হয়েছে সরকারি নির্দেশ আসতে, তাই অনুমোদন পাওয়ার পরে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির জন্য ১০০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দীপ্তেন্দু বেরা জানিয়েছেন, ২৬ অগস্টের
মধ্যে আবাস যোজনার সব প্রাপকদের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হবে। ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাপকদের
বাড়ি তৈরির অনুমোদন ও প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আবাস যোজনা নিয়ে অতীতে যে সব অভাব অভিযোগ উঠেছে, তা এড়াতে রাজ্যের নির্দেশেই এ বার কিছু নতুন পদক্ষেপ করছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ওই যোজনায় কোনও প্রাপক বাড়ি পাওয়ার প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড় করতে পারছেন কিনা, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকল কিনা, বাড়ি তৈরি করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে
কিনা, সে ব্যাপারে প্রশাসনিক নজরদারি থাকবে। প্রাপকদের সাহায্যের জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি করে কমিটি থাকবে।

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের কথায়, ‘‘এক জন প্রাপকের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়া, বাড়ির টাকা অন্য কোনও খাতে খরচ করে দেওয়া, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়ি শেষ না করা এড়াতেও কড়া নজর থাকবে।’’

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অর্থবর্ষে জেলা পেয়েছিল ৬৯ হাজার ৭০৭টি বাড়ি। প্রশাসনের দাবি, সে সব বাড়ির প্রায় ৯০ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, কাটমানি নেওয়ায় অনেকেই বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে পারেননি। তা ছাড়া উপভোক্তাদের একাংশ বাড়ি তৈরি না করে প্রকল্পের জন্য পাওয়া টাকা অভাবের তাড়নায় অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছেন বা পাকা বাড়ি করার কথা বললেও টিনের ছাউনি দিয়ে বাড়ি করেছেন।

প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার পাকা বাড়িই তৈরি করতে হবে। যাতে ঢালাই ছাদ থাকবে। যেহেতু আগের বারের থেকে বেশি সংখ্যায় বাড়ি মিলেছে, আগের খামতি ঢেকে যাতে গরিব মানুষের বাড়ি সঠিক ভাবে তৈরি হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখে এগোচ্ছে জেলা প্রশাসন।

জেলার কয়েক জন বিডিও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভিত্তিক বাড়ি প্রাপকদের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বাড়ি নেই এমন উপভোক্তাদের নাম বাদ দিয়ে তালিকা তৈরি করে, সেই তালিকা প্রতিটি পঞ্চায়েতে টাঙিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের নজরে আসে। চূড়ান্ত তালিকায় থাকা উপভোক্তাদের সাহায্যের জন্য থাকছেন আবাস-বন্ধুরা। যাতে প্রকৃত উপভোক্তার বদলে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে টাকা না যায়, সে জন্য সচিত্র ব্যাঙ্কের পাসবই, আধার কার্ড ভাল ভাবে যাচাই করা হবে। বাড়ির অনুমোদন পাওয়ার পরেই শিবির করে উপভোক্তাদের সচেতন করা ও চিঠি দেওয়ার কাজ করবে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন