বীরভূমে কর্তব্যরত নার্সের উপর হামলা। — নিজস্ব চিত্র।
মত্ত অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে এক মহিলা নার্সের উপর চড়াও হলেন এক যুবক! পাথর মেরে ফাটিয়ে দেওয়া হল তাঁর মাথাও। বুধবার বীরভূমের মহম্মদবাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার বিকেলে মহম্মদবাজার থানার অন্তর্গত কাঁইজুলির প্রাইমারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে। ধৃত যুবকের নাম রাজীব কাহার। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে এক নার্সের উপর চড়াও হন রাজীব। পাথর দিয়ে ওই নার্সের মাথায় আঘাত করা হয়। মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। কোনও মতে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই মহিলার মাথায় ২২ টি সেলাই পড়েছে।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত নার্সের নাম রীনা মণ্ডল। বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছিলেন রীনা। সেই সময় রাজীব নামে স্থানীয় ওই যুবক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ চাইতে থাকেন। তাতে রাজি না হওয়ায় আচমকা পাথর নিয়ে নার্সের উপর চড়াও হন তিনি। আঘাতে মহিলার মাথা ফেটে যায়। বেগতিক বুঝে পালানোর চেষ্টা করেন রাজীব। কিন্তু স্থানীয়েরাই ধাওয়া করে ওই যুবককে ধরে ফেলেন। পরে তাঁকে আটক করে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় ওই যুবক মত্ত ছিলেন। কেন তিনি ওই নার্সের উপর হামলা করলেন, সে সব এখনও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আক্রান্ত মহিলার স্বামী সন্তোষ ঘোষের কথায়, ‘‘যখন ঘটনাটি ঘটে, তখন আমি বাড়িতে ছিলাম। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে শুনলাম, এক যুবক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে আমার স্ত্রীর উপর চড়াও হয়। পাথর দিয়ে এলোপাথাড়ি মারা হয়েছে। গোটা মাথায় অনেকগুলো সেলাই পড়েছে। পরে এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবককে শনাক্ত করে আটক করেছে পুলিশ।’’ তবে এই ঘটনায় আরও এক বার প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে।
ঘটনায় বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার এবং পুলিশপ্রশাসন সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। আজ যে ঘটনা ঘটেছে, তা হতাশাজনক। আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি। হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার ও নার্স বোনেদের নিরাপত্তা চাই।’’ অন্য দিকে, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এটা চক্রান্তও হতে পারে। সামনে ভোট আসছে। তাই নানা ইস্যু তৈরি করে পরিকল্পনা হচ্ছে। তবে এ ভাবে বাংলার মানুষের মুখ ঘোরানো কঠিন।’’