Barabazar PS: বিয়াল্লিশে উড়েছিল তেরঙ্গা

সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিনটি এলেই ইতিহাসের স্মৃতিবাহী বরাবাজার থানা ভবন সংরক্ষণের দাবি ওঠে। এ বারও সেই দাবিতে সরব হয়েছেন অনেকে।

Advertisement

সমীর দত্ত

বরাবাজার শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৬
Share:

বরাবাজারে পুরনো থানা ভবন। নিজস্ব চিত্র।

১৯৪২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার ভবন দখল করে সত্যাগ্রহীরা তেরঙ্গা উড়িয়েছিলেন। তার পরে এক সপ্তাহ বরাবাজার ব্রিটিশ শাসনমুক্ত ছিল। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিনটি এলেই ইতিহাসের স্মৃতিবাহী বরাবাজার থানা ভবন সংরক্ষণের দাবি ওঠে। এ বারও সেই দাবিতে সরব হয়েছেন অনেকে।

Advertisement

মানভূম মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান তথা জেলার ইতিহাস গবেষক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘ ’৪২-এর আন্দোলনের ঢেউ এসে পৌঁছেছিল সাবেক মানভূম জেলাতেও। আন্দোলন দমাতে ব্রিটিশ শাসকেরা তৎকালীন কংগ্রেসের জেলা নেতাদের গ্রেফতার করেছিল। জেলের বাইরে থাকা যুবকেরা আন্দোলনের দায়িত্ব তুলে নেন। বরাবাজার ও বান্দোয়ান থানায় যুব সম্প্রদায়ের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে। বান্দোয়ানের পুরনো থানা ভবন ভেঙে নতুন নির্মিত হয়েছে। তবে জেলার স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মারক হিসাবে বরাবাজার থানা ভবন এখনও রয়েছে। অবিলম্বে সেই ভবন সংরক্ষণ করে ইতিহাসকে সামনে আনা উচিত।’’

এসডিপিও (মানবাজার) রাহুল পাণ্ডে বলেন, ‘‘বরাবাজার থানার পুরনো ভবনের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে বলে শুনেছি। সংরক্ষণের দাবির আবেদন পেলে তা বিবেচনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’’

Advertisement

বরাবাজারে নতুন থানা ভবনের সামনেই পুরনো ভবনটি রয়েছে। মাথায় কাঠের কাঠামোর উপরে মাটির খোলার আচ্ছাদন। চুন-সুরকির মোটা দেওয়াল। অনেকটা জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা শতাব্দী প্রাচীন ভবনটি এখনও মজবুত রয়েছে।

প্রদীপ জানান, বরাবাজার থানা অভিযানে ভীমচন্দ্র মাহাতো, ধনঞ্জয় মাহাতো, পদক মাহাতো, মথন মাহাতো প্রমুখরা সামনের সারিতে ছিলেন। স্বাধীনতা লাভের পরে, থানা অভিযানের ইতিহাস তাঁরা নিজেদের মতো লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন।

ওই ইতিহাস থেকে জানা যায়, আগের রাতে প্রস্তুতি নিয়ে ১৯৪২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কয়েকশো সত্যাগ্রহী থানা অভিযান চালান। দারোগা ও পুলিশদের বেঁধে ফেলা হয়। কেউ কেউ অবশ্য পালিয়ে গিয়েছিলেন।

নথিপত্র ও আনুষঙ্গিক জিনিসেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগের রাতেই টেলিগ্রাফের তার কেটে ও বিভিন্ন দিকের রাস্তা ও সেতু কেটে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। থানায় তোলা হয় তেরঙ্গা। এক সপ্তাহ বরাবাজারে ব্রিটিশ শাসন ছিল না। পরে, সত্যাগ্রহীদের ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেফতার করে।

বরাবাজারের বাসিন্দা সুমন্ত বন্দোপাধ্যায়, অমিত মোদক, অজিত মাহাতোরা বলেন, ‘‘পুরনো থানা ভবনের সঙ্গে স্বাধীনতার ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। তাই ওই ভবন সংরক্ষণ করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন