তখনও বেঁচে ঝিকরা। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন ভিন রাজ্যের এক যুবক। সহযাত্রীরাই জখম ওই যুবককে উদ্ধার করে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করার পরেও বাঁচানো গেল না তাঁকে।
শনিবার সন্ধ্যায় পিচকুড়ি ঢালের কাছে পূর্ব রেলের বর্ধমান থেকে বোলপুর স্টেশন আসার রেলপথে ঘটনাটি ঘটেছে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ঝিকরা মুর্মু (৩০)। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার মহেশপুর থানা এলাকায়। আরও দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিলে হয়তো আহত ওই যাত্রীকে বাঁচানো যেত, এমন একটি অভিযোগ অবশ্য রেল পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে। যদিও অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে রেল পুলিশের দাবি, তারা সাধ্যমতো দ্রুততার সঙ্গেই আহত যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
রেল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হাওড়া-মালদা টাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শনিবার বোলপুরের দিকে আসার সময় ভেদিয়ার আগের স্টপ পিচকুড়ি ঢালে হঠাৎ-ই ট্রেন থেকে পড়ে যান ওই যুবক। কেন, কীভাবে তিনি চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গেলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পড়ে গিয়ে পেটে এবং পায়ে মারাত্মক আঘাত পান ওই যাত্রী। সহযাত্রীরা চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে আহত ঝিকরাকে ফের ট্রেনে তুলে এনে বোলপুরে নামান। রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন। ট্রেনটির বোলপুর স্টেশনে ঢোকার নির্দিষ্ট সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট। ছেড়ে যাওয়ার কথা ৬টা ২২ মিনিটে। কিন্তু অভিযোগ, আহত যাত্রীকে ট্রেন থেকে নামানোর পরে বেশ খানিক ক্ষণ ফেলে রাখার পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায় রেল পুলিশ। সেখানে রেখে চিকিৎসা করার ঘণ্টা কয়েক পরে অবস্থার অবনতি হলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ওই যুবককে রেফার করা হয়। পরে সেখানেই তিনি মারা যান।
গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ রেল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বোলপুর রেল পুলিশের এক আধিকারিকের পাল্টা যুক্তি, ‘‘ট্রেনটির সময়-সারণী যাই হোক না কেন, শনিবার ট্রেনটি বোলপুর ঢোকে রাত ৭টা ৩৫মিনিটে। ছেড়ে যায় ৭টা ৩৭ মিনিট নাগাদ। আর বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ওই যুবককে ভর্তির সময় রাত ৮টা ১০ মিনিট।’’ রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নথিপত্র পূরণ করে ৫ কিলোমিটার দূরের মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করতে ওই টুকু সময় লাগতেই পারে বলে তাঁর মত।
পরিবার এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে রেল।