Purulia

স্কুল বন্ধ, অনলাইনেই চলছে বিজ্ঞান-চর্চা

ওই সংস্থার সাত জন সদস্য ২০১৫ সাল থেকে ছোটদের বিজ্ঞানমনস্ক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৩
Share:

হাতে-কলমে। নিজস্ব চিত্র।

করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ। পড়ুয়াদের হাতে অঢেল সময়। সেই সুযোগেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে হাতে-কলমে বিজ্ঞান চর্চার নেশা ধরানোর কাজ করে যাচ্ছে পুরুলিয়া জেলার একটি সংস্থা। হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিনামূল্যে পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের বিভিন্ন মডেল দেখিয়ে, তাদের কিছু করে দেখানোয় উৎসাহ দিয়ে আসছে ঝালদা ২ ব্লকের রাখবড়ের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাতে মেতেছে পুরুলিয়ার জয়পুর থেকে আড়শা, বাঘমুণ্ডি থেকে কোটশিলার ছেলেমেয়েরা।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই সংস্থা প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে আনে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পড়ুয়াদের যোগ দেওয়ার সুযোগ করিয়ে দেয়। অনলাইনে তারা পড়ুয়াদের বিজ্ঞান চর্চার মধ্যে রেখে প্রশংসনীয় কাজ করছে।’’

ওই সংস্থার সাত জন সদস্য ২০১৫ সাল থেকে ছোটদের বিজ্ঞানমনস্ক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সংস্থার তরফে সত্যবান কুমার বলেন, ‘‘সাধারণত গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের অনেকের মধ্যেই বিজ্ঞান নিয়ে একটা ভীতি কাজ করে। তা কাটাতেই বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে আমরা মজার মোড়কে বিজ্ঞানকে হাজির করে পড়ুয়াদের তার প্রতি আকৃষ্ট করে যাচ্ছি।’’

Advertisement

তিনি জানান, গোড়ায় তাঁরা ঝালদা ২ ব্লক ও লাগোয়া ব্লকের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের নিয়ে অনুষ্ঠান করতেন। পরে, অন্য এলাকার স্কুল থেকে ডাক পেয়ে সেখানেও তাঁরা যাচ্ছিলেন। তবে করোনা আবহে স্কুলের দরজা বন্ধ হলেও বিজ্ঞানের চর্চা যাতে না থেমে যায়, সে কারণে তাঁরা পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের ফোন নম্বর নিয়ে হোয়াটস অ্যাপে একাধিক গ্রুপ খুলে ফেলেছেন। তাতেই চলছে বিজ্ঞান-চর্চা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টি গ্রুপে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ যুক্ত।

পুরুলিয়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, ‘‘আমিও হোয়্যাটসঅ্যাপে ওদের বিজ্ঞানের আলোচনা দেখি। এ ভাবে বিজ্ঞান চর্চা চললে, পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়বেই।’’ কী ভাবে আলোচনা চলে? সত্যবানবাবু জানান, বায়ুর চাপ বা আলোর গতিবেগ কিংবা কোন মাধ্যমে শব্দ দ্রুত প্রবাহিত হতে পারে— এমনই নানা পরীক্ষার ভিডিয়ো তুলে আমরা নিয়মিত আপলোড করছি। পরে পড়ুয়ারা হাতেকলমে তা পরীক্ষা করে, সে ভিডিয়ো আপলোড করছে। মাঝেমধ্যে অনলাইনে পরীক্ষাও নেওয়া হয়। এ ছাড়া, বিভিন্ন গাছের বীজ সংগ্রহ, মাটি পরীক্ষার মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হচ্ছে।

ঝালদা ২ ব্লকের উপরবাটরি গ্রামের দশম শ্রেণির পড়ুয়া দিলীপ মাহাতো, অষ্টম শ্রেণির ত্রিলোচন মাহাতো, জয়পুর গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির বর্ষা কুমারের কথায়, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাজিকের ঢঙে বিজ্ঞানের অনেক কিছু শিখছি। পরে তা বইয়ে পড়ার সময়ে মজা লাগছে।’’

পুরুলিয়া জেলা সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক বিকাশরঞ্জন মজুমদার বলেন, ‘‘আমি এই সংগঠনটিকে অনেক দিন ধরেই চিনি। এ ভাবে বিজ্ঞানকে প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া গেলে তাতে এই জেলারই মঙ্গল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন