Jhalda

ঝালদার ‘গাজোয়ারি’ কি পঞ্চায়েত ভোটেও, আশঙ্কা

ঘটনা হল, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় মনোনয়ন-পর্বে অশান্তি হয়েছিল কাশীপুর, হুড়া, বলরামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৮
Share:

ঝালদা পুরপ্রধানের এই চেয়ারের দখল নিতেই যত কাণ্ড। নিজস্ব চিত্র

ঝালদার মতো ছোট্ট একটি পুরসভার দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘গাজোয়ারি’ করার অভিযোগ আগেই তুলেছেন বিরোধীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও শাসকদল এমন ‘গাজোয়ারি’ করবে না তো, এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের। তাঁদের আশঙ্কা, বিরোধীদের ‘দমিয়ে’ রাখতে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে পারে তৃণমূল। যদিও পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘নির্বাচনে পেরে না উঠে বিরোধীরা নির্বাচনের সময় এ রকম ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেই থাকেন।’’

Advertisement

ঘটনা হল, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় মনোনয়ন-পর্বে অশান্তি হয়েছিল কাশীপুর, হুড়া, বলরামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায়। রক্ত ঝরে বর্ষীয়ান প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া-সহ অনেক নেতা-কর্মীর। গণনা ও বোর্ড গঠনকে ঘিরে অশান্তি ছড়ায় ব্যাপক। জয়পুরের ঘাঘরা পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে অশান্তিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে বলরামপুরের সুপুরডি ও ডাভায় দুই বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়েছিল রাজ্যে।

ঝালদা পুরসভার অনাস্থাকে ঘিরে গত তিন মাস ধরে কখনও প্রশাসনের অন্দরে, কখনও হাই কোর্টের এজলাসে যুযুধান কংগ্রেস ও তৃণমূলের টানাপড়েন দেখছেন ঝালদাবাসী। হাই কোর্ট ঘুরে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এখনও কিছু মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাই কোর্ট ঝালদার পুরপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছে পূর্ণিমা কান্দুকে। তৃণমূল নেতৃত্ব এ নিয়েও হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তা করছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতোই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও শাসকদল সন্ত্রাসের পরিবেশ বজায় রাখবে বলে দাবি করছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। তবে একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘রাজনৈতিক ভাবেই শাসকদলের সমস্ত বিরোধিতার মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আদালতের দরজাও খোলা রয়েছে। গ্রাম-গঞ্জের মানুষজনও সন্ত্রাসের জবাব দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছেন বিরোধী অন্য দলগুলিও। ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক মিহির মাঝির দাবি, ‘‘যে দলের মুখে বিরোধী-শূন্য বাংলার কথা শোনা যায়, তারা যে সন্ত্রাস করবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষই সন্ত্রাসের জবাব দেবেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, ‘‘মানুষ লাল ঝান্ডার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন। মানুষকে নিয়েই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’’

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি পুরুলিয়ায় খাতা খোলে। সেই ধারা বজায় থাকে লোকসভা নির্বাচনেও। বিধায়কের সংখ্যাতেও বিজেপি এই জেলায় এগিয়ে। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনে তৃণমূল সন্ত্রাস করবে, এ আর নতুন কি? তবে এ বার প্রতিরোধ হবে। কর্মীরা প্রস্তুত। রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলার পাশাপাশি আদালতের দরজাও খোলা থাকছে।’’ তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেনের দাবি, ‘‘বিরোধীদের ভিত্তিহীন দাবি। নির্বাচন যেমন অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হয়, তেমনই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন