‘বেপাত্তা’ ঠিকাদার, টাকা উদ্ধার করতে স্মরণ প্রশাসনকে

পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, বালির ট্রাক পিছু ৮০ টাকা, ট্রাক্টর পিছু ৪০ টাকা করে পথ-কর নেওয়া হয়। সাতটি রাস্তা থেকে পথ-কর আদায়ের জন্য বিগত পঞ্চায়েত বোর্ড থেকে ‘টেন্ডার’ করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোতুলপুর শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৮
Share:

কোতুলপুরের মদনমোহনপুর পঞ্চায়েত অফিস। নিজস্ব চিত্র

গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে সাতটি রাস্তায় টোল আদায় করা হলেও সেই টাকা জমা পড়ছে না—এমনই অভিযোগ তুলে ওই টাকা উদ্ধারের জন্য বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। ঘটনাটি কোতুলপুর ব্লকের মদনমোহনপুর পঞ্চায়েতের।

Advertisement

দ্বারকেশ্বর নদ থেকে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন দিকে সাতটি রাস্তা গিয়েছে। খুনডাঙা অঞ্চল অফিস, খুনডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামারবেড়িয়া রথতলা, বইডাঙা শিবতলা, মধুবন খাল-ব্রিজ ইত্যাদি জায়গা দিয়ে রাস্তাগুলি রয়েছে। নদী থেকে বালি তুলে বহু ট্রাক যাতায়াত করে বলে সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত থেকে পথ-কর নেওয়া হয়ে আসছে।

পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, বালির ট্রাক পিছু ৮০ টাকা, ট্রাক্টর পিছু ৪০ টাকা করে পথ-কর নেওয়া হয়। সাতটি রাস্তা থেকে পথ-কর আদায়ের জন্য বিগত পঞ্চায়েত বোর্ড থেকে ‘টেন্ডার’ করা হয়েছিল। বার্ষিক ৯৫ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬০১ টাকা পঞ্চায়েতে জমা করার শর্তে এক ব্যক্তিকে পথ-কর আদায়ের অনুমতি দেয় পঞ্চায়েত।

Advertisement

তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান চম্পা সরকারের অভিযোগ, ‘‘চলতি বছরের জুলাই মাসে ওই ব্যক্তি পথকর বাবদ ৩০ লক্ষ ৭ হাজার ৩০০ টাকা জমা করেই ‘বেপাত্তা’ হয়ে গিয়েছেন। তাঁকে তিন বার নোটিস পাঠিয়েও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তির জামানত বাবদ ২৪ লক্ষ ২৮ হাজার ও অগ্রিম মূল্য বাবদ ৫০ হাজার টাকা পঞ্চায়েতে জমা আছে। তার পরেও প্রায় ৫০ লক্ষের বেশি বকেয়া রয়েছে। তাই ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। সেখানে তদন্তের আশ্বাস মিললেও, কোনও সুরাহা না হওয়ায় জেলাশাসককে জানাতে বাধ্য হয়েছি। কয়েক লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলে পঞ্চায়েতেরই ক্ষতি।’’ চেষ্টা করেও পথ-কর আদায়ের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ। জবাব দেননি এসএমএসেরও।

এ দিকে জেলাশাসকের মৌখিক নির্দেশ পেয়েই তড়িঘড়ি বিডিও (কোতুলপুর) একটি জরুরি সভা ডাকেন। সেখানে বিডিও, থানার ওসি আলোচনায় বসেন। পঞ্চায়েতের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। উল্টে প্রশাসনের একাংশ যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা পঞ্চায়েতের তরফে মানা সম্ভব নয়। যদিও বিডিও (‌কোতুলপুর) পরিমল গায়েন দাবি করেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্ত করে রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস অবশ্য বলেছেন, ‘‘টেন্ডার অনুযায়ী, সব কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পঞ্চায়েতকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

এ দিকে জটিলতার জেরে ওই রাস্তায় পথ-কর আদায়ও বেশ কিছু ধরে। নতুন করে ‘টেন্ডার’ না হওয়ায় সে দিক থেকেও পঞ্চায়েতের পথকর বাবদ রাজস্বের ক্ষতি আরও বাড়ছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রশাসন দ্রুত এই জট কাটাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন