—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
খেতের ফসল বাঁচাতে গিয়ে হাতির হানায় প্রাণ হারালেন এক কৃষক। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুরের কুড়চিডাঙা এলাকায়। মৃতের নাম রামপদ হেমব্রম (৩৯)। তাঁর পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি নিয়ে শনিবার সরব হয়েছেন এলাকাবাসী।
বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ার পাবয়ার জঙ্গলে প্রায় চার মাস কাটানোর পর দিন কয়েক আগে ৬৩টি হাতি দলে দলে ভাগ হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পথ ধরে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৩টি হাতির একটি দল দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহের দিকে এগোতে শুরু করে। হাতির জন্য আলুর খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসল বাঁচাতে গিয়ে জমি পাহারা দিতে যান কুড়চিডাঙা গ্রামের কৃষকেরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রামপদও। হাতির পালকে তাড়া করার সময় একটি হাতির সামনে পড়ে যান তিনি। হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে তুলে মাটিতে আছড়ে দেয়। তার পর পা দিয়ে পিষে ফেলে। সেখানেই মারা যান রামপদ।
পরে বন দফতর এবং পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। মৃতের স্ত্রী সজলি হেমব্রম বলেন, ‘‘অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে আমরা ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। শুক্রবার গ্রামে খবর রটে যায়, হাতির দল আলুর জমির দিকে এগোচ্ছে। ফসল নষ্টের আশঙ্কায় গ্রামের অন্যদের সঙ্গে আমার স্বামীও জমি পাহারা দিতে গিয়েছিল। গ্রামবাসীরা সকলে মিলে হাতির মূল দলটিকে জমি থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু পিছনে আরও তিনটি হাতি ছিল। রাতের অন্ধকারে তাদের দেখা যায়নি। তাদেরই একটি আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে।’’
রামপদের মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। তবে বিষ্ণুপুর বন বিভাগের এডিএফও বীরেনকুমার শর্মা বলেন, ‘‘যে জায়গায় দুর্ঘটনা হয়েছে, সেখানে আলু বা ধানের জমি নেই। সম্ভবত হাতির দলকে দেখতে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। রাতের অন্ধকার ও কুয়াশার কারণে আক্রমণকারী হাতি তাঁদের নজরে আসেনি। আমরা সবদিক খতিয়ে দেখে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ-সহ মৃতের পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’’