মোটরবাইকে চড়ে মূর্তিমান। —নিজস্ব চিত্র।
দোকানের সামনে বসে খাবার আদায় করা ছিল রোজকার ব্যাপার। লোকজন মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই হনুমান হঠাৎ করে লোকজনকে খামচাতে শুরু করায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন আদ্রার বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই হনুমানের হামলায় জখম হয়েছেন দুই স্কুল পড়ুয়া-সহ চার জন। তার মধ্যে সোমবার ও মঙ্গলবার হামলায় দুই ব্যক্তি জখম হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কাশীপুরের বন দফতরের অবশ্য আশ্বাস, তাঁরা হনুমানটিকে ধরার ব্যবস্থা করছেন।
আদ্রায় হনুমানের উপদ্রব এত দিন কার্যত ছিল না বললেই চলে। মাঝে মধ্যে দল বেঁধে কয়েকটি হনুমান বিভিন্ন পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়, ঘরের ছাদে উঠে বসে থাকে। কিন্তু, মানুষজনকে জখম করেছে— এমন ঘটনা অতীতে ঘটেনি বলেই জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।
আদ্রার সাউথ সেটেলমেন্ট এলাকার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক মাস ধরে হনুমানটি একাই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খাবারের দোকানের সামনে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকত। খাবার দিলে খেয়ে দেয়ে সরে গিয়ে অন্য দোকানের সামনে বসে পড়ত।
এ বার কিন্তু, হিংস্র হয়ে উঠেছে সেই হনুমানটি। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত মাসেই ওই হনুমানটি উপদ্রব চালায় আদ্রার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। সকাল আটটা নাগাদ প্রার্থনা শুরু হতেই স্কুলের ছাদে বসে থাকা হনুমানটি সটান সেখানে নেমে আসে। ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় দুই পড়ুয়াকে। পড়ে গিয়ে এক ছাত্রের মাথা পেটে যায় বলে অভিযোগ।
তারপর আর অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। সম্প্রতি আবার উৎপাত শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বাঙালি সমিতি এলাকায় এক রেলকর্মীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর ঘাড় ও পিঠে খামচে দেয় সে। মঙ্গলবার সকালে সাউথ সেটেলমেন্ট এলাকায় একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়া এক মোটরবাইক চালককে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় হনুমানটি। পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন ওই ব্যক্তি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলের সামনে একটি মোটরবাইকের উপরে বসেছিল হনুমানটি। হঠাৎ সামনে দিয়ে যাওয়া এক বাইক চালককের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।’’ স্কুলের সামনে ও স্কুলের ভিতরে ঢুকে হনুমানটি উপদ্রব শুরু করায় স্বভাবতাই তাঁদের মত অভিভাবকেরা আতঙ্কিত বলে জানান প্রশান্তবাবু।
বন দফতরের কাশীপুরের রেঞ্জ অফিসার অসিতবরণ সিং সর্দার বলেন, ‘‘আদ্রায় একটি হনুমান উপদ্রব শুরু করেছে বলে খবর পেয়েছি। তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে ধরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’