ট্রেন ধাওয়া করে আটক ফেনসিডিল

পরের স্টেশন রামপুরহাট। ফারুককে নিয়ে আবগারি অফিসারেরা যখন সেখানে পৌঁছন, বেনারস এক্সপ্রেস সবে স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৩৩
Share:

উপায় না-দেখে বীরভূমের রাজগ্রাম স্টেশন থেকে অভিযুক্ত ফারুক হককে ধরে গাড়িতে তোলা হয়। এবং অনেকটা হিন্দি সিনেমার কায়দায় দু’টি গাড়ি নিয়ে ধাওয়া করা হয় বেনারস এক্সপ্রেসের পিছনে। রবিবার ভোর তখন সাড়ে ৪টে।

Advertisement

পরের স্টেশন রামপুরহাট। ফারুককে নিয়ে আবগারি অফিসারেরা যখন সেখানে পৌঁছন, বেনারস এক্সপ্রেস সবে স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আরপিএফ-কে বলে থামানো হয় সেই ট্রেন। তার মালপত্র রাখার কামরা থেকে নামানো হয় দশ কার্টন ফেনসিডিল। হিমাচলপ্রদেশে তৈরি হয়ে এই কাশির ওষুধ পাচার করা হচ্ছিল বাংলাদেশে। ও-পারে তা ব্যবহার করা হচ্ছে নেশার জন্য। ট্রেন থেকে পাওয়া তিন হাজার বোতল ফেনসিডিলের দাম এ দেশে তিন লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। বাংলাদেশে তা বিক্রি হওয়ার কথা দশ গুণ দামে। গ্রেফতার করা হয় ফারুককে।

রাজ্যের আবগারি দফতরের অতিরিক্ত কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস জানান, কয়েক দিন আগে খবর আসে, ডাউন বেনারস এক্সপ্রেসে ফেনসিডিল আসছে এবং তা নামছে বীরভূমের রাজগ্রাম স্টেশনে। ভোর ৪টে নাগাদ ট্রেনটি রাজগ্রামে দাঁড়ায়। মালপত্রের কামরার দরজা খুলে অন্য সামগ্রীর সঙ্গে নামিয়ে আনা হয় ফেনসিডিলও। সম্প্রতি বেশ কয়েক বার এ ভাবে ফেনসিডিল আনা হয়েছে এ রাজ্যে। সেই ফেনসিডিল আসছে হিমাচলের সোলান থেকে। সড়কপথে তা বারাণসীতে এনে তুলে দেওয়া হচ্ছে ট্রেনে।

Advertisement

শনিবার মাঝরাত থেকে এক দল আবগারি অফিসার অপেক্ষা করতে থাকেন রাজগ্রাম স্টেশনে। অন্য এক দল অফিসার আগের স্টেশন, ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে গিয়ে সেখান থেকেই বেনারস এক্সপ্রেসে উঠে বসেন। গার্ডের কাছে থাকা তালিকাতেও দেখা যায়, দশটি কার্টন নামানোর কথা রাজগ্রামে। কিন্তু সেই কার্টন বা বাক্সে যে ফেনসিডিল রয়েছে, গার্ডের তালিকায় তার উল্লেখ ছিল না। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ফারুক যে ফেনসিডিল নিতে আসবে, তা আমরা জানতাম। তার চেহারার বর্ণনা ছিল আমাদের কাছে।’’ ফারুক পৌঁছেও গিয়েছিল রাজগ্রাম স্টেশনে। কিন্তু সম্ভবত আবগারি অফিসারদের উপস্থিতির আঁচ পেয়ে সে এবং তার শাগরেদরা নিষ্ক্রিয় থাকে। রবিবার ভোর সাড়ে ৪টেয় বেনারস এক্সপ্রেস এসে থামলেও মালপত্রের কামরা বন্ধই থাকে। একটু দাঁড়িয়ে ট্রেন রাজগ্রাম থেকে ফের রওনা হয়ে যায়।

তার পরেই ফারুককে ধরে তোলা হয় গাড়িতে। শুরু হয় ট্রেনের পিছনে দৌড়। ফারুকের বাড়ি রাজগ্রামেই। তাকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাকে জেরা করে পাওয়া গিয়েছে বেশ কয়েকটি নাম। ফারুকের দাবি, স্থানীয় এক ব্যক্তির হাতে ফেনসিডিল পৌঁছে দেওয়াই ছিল তার কাজ। সেই ব্যক্তিই সেই মূল পাচারকারী। হিমাচল থেকে যারা ফেনসিডিল তৈরি করে পাঠায়, তাদের এবং মূল পাচারকারীর ফোন নম্বর পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে হিমাচলের আবগারি দফতরকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন