বিস্ফোরক: রামপুরহাট থানায় উদ্ধার সামগ্রী। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের তাড়া খেয়ে বিস্ফোরক বোঝাই মোটরবাইক ফেলে চম্পট দিল এক পাচারকারী। রামপুরহাটের শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলের মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। উদ্ধার হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশোটি ডিটোনেটর, দু’শো জিলেটিন স্টিক এবং ৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। কোথা থেকে কী উদ্দেশে ওই পরিমাণ বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। রামপুরহাটের এসডিপিও ধৃতিমান সরকার জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছিল। সেই নজরদারি টের পেয়ে পাচারকারী মোটরবাইক ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘটনা হল, দিন কুড়ি আগেই মহম্মদবাজার থানার পুলিশ দু’ট্রাক-ভর্তি বিস্ফোরক (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট) উদ্ধার করেছিল। মহম্মদবাজারের গণপুর থেকে ভাড়কাটা যাওয়ার রাস্তায় বিস্ফোরকের বস্তা বোঝাই একটি ট্রাককে ধরে পুলিশ। পরে তালবাঁধের পাথরচাল থেকে আটক করা হয় দ্বিতীয় ট্রাকটিকে। সেই সময় এক ব্যবসায়ীর গোডাউনে মাল খালাস করা হচ্ছিল। ট্রাক দু’টি মিলিয়ে ৭০০ বস্তারও বেশি বিস্ফোরক ছিল বলে দাবি পুলিশের।
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সার হিসেবে ব্যবহার হয়। তেমনই ডিটোনেটর ও জিলেটিন-স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণের সময় তীব্রতা কয়েক গুণ বাড়াতে ব্যবহৃত হয় এই রাসায়নিক। পুলিশ জানাচ্ছে, মহম্মদবাজার এলাকায় প্রচুর পাথর খাদান রয়েছে। পাথরের চাঁই ভাঙতে হামেশাই বিস্ফোরণের প্রয়োজন হয়। ফলে এই এলাকায় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। একই কথা বলা যায় শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চল সম্পর্কেও। এখন পরিবেশ আদালতের ছাড়পত্র না পাওয়ায় সরকারি ভাবে অধিকাংশ খাদান বন্ধ। তা হলে এত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কী কাজে লাগবে? অনেকের দাবি, খাদান আসলে বন্ধ নয়। প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে কিছু খাদান এখনও চলছে। অবৈধ হলেও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ডিটোনেটর ও জিলেটিন-স্টিক তাই কাজের জিনিস।
পুলিশ অবশ্য সে অভিযোগ মানতে চায়নি। কোথা থেকে আবারও এত পরিমাণ বিস্ফোরক এল তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের।