পাত্র-পাত্রী নাবালক, দুয়ারে পুলিশ

গ্রামে যে ছেলের সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক করেছিল পরিবার, সেই পাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। বয়স ১৮ ছোঁয়নি। কলেজে ভর্তি হয়ে আর পড়তে যায়নি। একটি ইটভাটায় দিনমজুরি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর ও বোলপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাত্রী নাবালিকা। পাত্রও নাবালক। বিয়ের দিনই তাদের বিয়ে রুখল প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে চাইল্ড লাইন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে বিয়ে বন্ধ হয় বছর চোদ্দোর ওই নাবালিকা এবং বছর সতেরোর নাবালকের। ঘটনাস্থল দুবরাজপুরের যশপুর পঞ্চায়েত। নাবালিকা যশপুর এলাকার একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া। গ্রামে যে ছেলের সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক করেছিল পরিবার, সেই পাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। বয়স ১৮ ছোঁয়নি। কলেজে ভর্তি হয়ে আর পড়তে যায়নি। একটি ইটভাটায় দিনমজুরি করে।

Advertisement

পুলিশ ও চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরের গ্রামে এমন একটি বিয়ে হতে চলেছে, এই মর্মে সোমবার রাতেই চাইল্ড লাইনের টোল-ফ্রি নম্বর ১০৯৮ ফোন যায়। দুবরাজপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পাত্র ও পাত্রী, দুই বাড়িতেই পৌঁছে যান চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি মধুমিতা হাজরা। প্রথম দিকে পাত্রীর পরিবার বিয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে সেটা মেনে নেয়। ১৮-র নীচে বিয়ে নয়, মুচলেকা দিয়েছেন ওই নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা। একই ভাবে মুচলেকা দেয় নাবালকের পরিবারও। মধুমিতা বলেন, ‘‘আমরা যখন মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করি, তখন সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায় বলে জানায়।’’ প্রশাসন জানিয়েছে, মেয়েটির পড়াশোনার ব্যাপারে সব রকম সাহায্য করা হবে।

এ দিনই এক নাবালিকার বিয়ে রোখা হয়েছে বোলপুর থানার একটি গ্রামে। এ ক্ষেত্রেও চাইল্ড লাইনের কাছে খবর এসেছে ১০৯৮ টোল-ফ্রি নম্বরে। সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ১৬ বছরের এক নাবালিকার গোপনে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তার গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে। মেয়ের বিয়েতে বেশি খরচা না করতে পারলেও নতুন জামাইকে যৌতুক হিসেবে মোটরবাইক দেবেন— তা আগেই স্থির করে রেখেছিলেন নাবালিকা পাত্রীর পেশায় লরিচালক বাবা। সেই মতো একটি নতুন বাইক কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু গ্রাম থেকেই ১০৯৮ টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে গোপনে এই বিয়ে দেওয়ার খবর জানানো হয়।

Advertisement

মঙ্গলবার বোলপুর থানার পুলিশ এবং জেলা চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি নূপুর মজুমদার ওই গ্রামে মেয়েটির বাড়ি গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। নূপুর বলেন, ‘‘প্রথমে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়। আমরাও খবর পেয়েছিলাম যৌতুকে জামাইকে নতুন বাইক দেওয়া হচ্ছে। মেয়েটির বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখি নতুন বাইক রাখা। তাতেই আমাদের সন্দেহ জাগে। আমরা চেপে ধরতেই, বিয়ে দেওয়ায় কথা স্বীকার করে নেয়।’’ ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটির বিয়ে দেওয়া যাবে না, সেই মর্মে পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকাও নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন