প্রিয়জনকে বিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে ঘর ছেড়েছিল স্কুল পড়ুয়া মেয়েটি। কিন্তু দূরে যেতেই ভূমিকা বদলে গিয়েছিল সেই প্রিয়জনের। হাত বদলে সেই মেয়েই হয়তো মুম্বইয়ের নিষিদ্ধ পল্লিতে ঠাঁই পেয়েছে। হারিয়ে গিয়েছে তার ভালবাসার সেই মানুষ।
কোনও অলীক গল্প নয়। বাঁকুড়া জেলাতেও স্কুলের ছাত্রীদের ফাঁসলে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সবাইকে যে বিপথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা নয়। তবে এ ভাবে বাড়ি ছেড়ে অনেকেই বিপদে পড়ছে। আর যাতে কেউ কোনও প্রলোভনে না পড়ে, তা বোঝাতেই স্কুলে স্কুলে সচেতনতার প্রচারে নেমেছে পুলিশ। একই সঙ্গে মেয়েদের স্কুলগুলির সামনে ছেলেরা জটলা করে কটুক্তি করলে তারা কী করবে তাও জানানো হচ্ছে। বাল্যবিবাহ বন্ধেরও বার্তা দেওয়া হয়।
এ সব নিয়েই ছাত্রীদের সচেতনতা করতে বুধবার বিষ্ণুপুর পরিমলদেবী গার্লস হাইস্কুলে একটি শিবির করলেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক লাল্টু হালদার, বিষ্ণুপুর থানার আইসি আস্তিক মুখোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের টিম মেম্বার শিবদাস ঘটক, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌটুসী চন্দ্র প্রমুখ। মূলত ওই স্কুলের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের নিয়েই ছিল এই শিবির।
নিজের বক্তব্যে গল্পচ্ছলে নানা প্রশ্নের মাধ্যমে ছাত্রীদের প্রথমেই আপন করে নেন লাল্টুবাবু। অল্প বয়সে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পতিতাপল্লিতে বিক্রির ঘটনা ঘটছে জানিয়ে তাদের যেমন সচেতন হতে তিনি বললেন। তেমনই কেউ রাস্তায়, স্কুলে আসার পথে কুপ্রস্তাব দিলে বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষিকাদের জানাতে বা সরাসরি থানায় জানানোর পরামর্শ দিলেন একেবারে অভিভাবকের মতো।
বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে ছাত্রীদের সচেতন করা হয়। তারপরেই তাদের জানানো হয়, এলাকায় কোনও নাবালিকার বিয়ের খবর পাওয়া গেলে তাঁরা যেন স্কুল বা থানায় বা বিডিও অফিসে খবর দেন। শিবদাসবাবু বলেন, ‘‘এই স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সাহায্য নিয়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীর বিয়ে আমরা আটকাতে পেরেছি। সে কারণে এ দিন খোলাখুলি আলোচনায় ওদের সঙ্গে বসতে পেরে খুব ভাল লাগল।’’
প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহের প্রবণতা যে ভাবে বাড়ছে তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। মহকুমা পুলিশ কর্তার কথায় স্কুলের ছাত্রীরা অনেকটাই সাহস পেয়েছে।’’ শিবির থেকে বেরিয়ে স্কুলের ছাত্রী অনুষ্কা, সঞ্চিতা, মৌসুমীরা বলে, ‘‘উনি যে একজন পুলিশ অফিসার তা আমাদের বুঝতেই দেননি। কথা বলছিলেন একেবারে দাদার মতো। অনেক সতর্ক হয়ে গেলাম আমরা।’’ আর এসডিপিও বলেন, ‘‘ওঁদের এই বিপদগুলো সম্পর্কে সচেতন করে ভাল লাগল। আমরা শহরের অন্য গার্লস স্কুলেও এ ধরণের সচেতনতা শিবির করব।’’
শ্রমিক-বিক্ষোভ। গেট পাস পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় কাজে যোগ দিতে পারেননি দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কাঁচামাল বিভাগের ৩১ জন কর্মী। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিভাগের সব ঠিকা শ্রমিক একযোগে কাজ বন্ধ রেখে ২ নম্বর গেটে বিক্ষোভ দেখালেন। ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিভাগে মোট ২২৯ জন ঠিকা শ্রমিক কাজ করেন। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে ৩১ জনের গেট পাস পুনর্নবীকরণ হয়নি। ফলে, বৃহস্পতিবার তাঁদের কাজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের দাবি, বেশ কয়েক বছর ধরে কারখানার এই বিভাগে তাঁরা কাজ করছেন। আইএনটিটিইউসি নেতাদের মদতেই ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের গেট পাস আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইএনটিটিইউসি নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়।