স্লোগান ঘিরে সংঘর্ষ, পুড়ল অফিস

তৃণমূলের একটি নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০১:১৩
Share:

ধ্বংসস্তূপ: আগুনে ছাই তৃণমূলের কার্যালয়। বুধবার মেলানপুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

ময়ূরেশ্বরের পরে সাঁইথিয়া।

Advertisement

অভিযোগ, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে তেতে উঠল মেলানপুর গ্রাম। তৃণমূলের একটি নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

শাসকদলের ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের লোকেরাই তাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করেছে। সেই অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করা হচ্ছে।

Advertisement

কয়েক দিন আগে ময়ূরেশ্বরের গ্রামে তৃণমূল আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে একই স্লোগান দেওয়া নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের সংর্ঘষ হয়। এক বিজেপি কর্মীকে তির মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির বিরুদ্ধে এক তৃণমূল কর্মীর পানের বরজ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

মঙ্গলবার কার্যত একই ঘটনা ঘটে সাঁইথিয়ার মেলানপুরেও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলানপুর গ্রাম সাংড়া পঞ্চায়েতের অধীনে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা সেখানে কোনও প্রার্থী দিতে না পারায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েতভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে সেখানে পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে ৬টিতে তৃণমূল এবং ৬টিতে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে।

ভোটের ময়দানে কয়েকটি পঞ্চায়েতে এগিয়ে থাকার নিরিখেই মঙ্গলবার মেলানপুরের লাগোয়া মৃতদাসপুরে লাড্ডু বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। তার পরে মেলানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মিসভা ছিল তাদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাড্ডু বিতরণ অনুষ্ঠানের পরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা মৃতদাসপুরের ওই কর্মিসভায় যাওয়ার পথে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন। এলাকাবাসীর একাংশ জানিয়েছেন, বিজেপির ওই কর্মিসভা শেষ হওয়ার পরেও একই স্লোগান দিতে দিতে বাড়ি ফিরছিলেন দলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থক।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই সময় মেলানপুরে দলের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভোটের ফল পর্যালোচনা করছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁরা বিজেপি কর্মীদের কটুক্তি করেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাঁধে। অঙিযোগ, লাঠিসোটা নিয়ে একে অন্যের উপর চড়াও হয় দু’দলের লোকেরাই। খবর পেয়ে রাত ১১টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। উত্তেজনা থাকায় সারা রাত গ্রামে টহল দেয় পুলিশ।

বুধবার ভোরে তৃণমূলের ওই নির্বাচনী কার্যালয় এবং লাগোয়া এক তৃণমূল কর্মীর ধানের পালুইয়ে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। অভিযোগ, তিন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। তৃণমূলের আমোদপুর এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি প্রশান্ত সাধুর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির লোকেরা মঙ্গলবার আমাদের দলীয় অফিসে চড়াও হন। কর্মীদের তৃণমূল ছেড়ে তাদের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য চাপ দেয়। কর্মীরা তা অস্বীকার করায় তাঁদের উপরে হামলা চালানো হয়। রাতের অন্ধকারে দলীয় অফিস, আমাদের এক কর্মীর ধানের পালুইয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। কয়েকটি বাড়ির চাল ভাঙা হয়।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি সাঁইথিয়া ব্লক গ্রামীণ (বি) মণ্ডল কমিটির সভাপতি রামপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওরাই আমাদের কর্মীদের মারধর করে। আমাদের কর্মীদের ফাঁসাতে নিজেরাই ওই সব কাণ্ড করে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’জনকে আটক করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশ টহল চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন