৫ দিন পরে এল হেমন্তের দেহ

সন্ধ্যাতেই হল ময়না-তদন্ত

 সূর্য ডুবে গেলে মর্গে ময়না-তদন্তের রেওয়াজ নেই। ব্রিটিশ আমলের এই ধারাই চলে আসছে। তবে কেরলে রহস্যজনক ভাবে মৃত হেমন্ত রায়ের দেহ পাঁচ দিন পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ায় পৌঁছনোর পরে তা আর ফেলে না রেখে আলো জ্বেলেই তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ময়না-তদন্ত করা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইন্দাস শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

বিদায়: বাঁকুড়ার মর্গ থেকে বের করা হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

সূর্য ডুবে গেলে মর্গে ময়না-তদন্তের রেওয়াজ নেই। ব্রিটিশ আমলের এই ধারাই চলে আসছে। তবে কেরলে রহস্যজনক ভাবে মৃত হেমন্ত রায়ের দেহ পাঁচ দিন পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ায় পৌঁছনোর পরে তা আর ফেলে না রেখে আলো জ্বেলেই তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ময়না-তদন্ত করা হল। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রবিবার রাতে গলার নলি কাটা অবস্থায় হেমন্তের দেহ উদ্ধার হয়। মঙ্গলবার কেরল পুলিশ ময়না-তদন্ত করে আত্মহত্যার দিকে ইঙ্গিত করলেও তাঁর পরিবার ও বিভিন্ন দিক থেকে মৃত্যুর কারণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছিল। তাই নিসংশয় হতে এখানে আরও এক বার ময়না-তদন্ত করা হল।’’ তিনি জানান, সংরক্ষণের চেষ্টা করা হলেও দেহটিতে পচন পুরোপুরি ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই দেরি না করে এ দিন জেলায় দেহটি আসতেই ময়না-তদন্ত করা হল।

Advertisement

কাজের খোঁজে কেরলের আলাপুঝা জেলার পুচাক্কেল থানার পানাভাল্লি গ্রামে পুজোর সময়ে গিয়েছিলেন ইন্দাসের রোল গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের হেমন্ত। কিন্তু রবিরার রাতে সেখানেই তাঁর গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। সোমবার সে খবর এলেও দেহ আসতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে মৃতের পরিবার ও পরিজনেরা ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন। দেহ আনতে দু’দিন ধরে কলকাতায় গিয়েও অপেক্ষায় থাকেন হেমন্তের পরিজনেরা। বিমানে দেহ আনার নথি তৈরি হতে দেরি হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছিল।

শেষে এ দিন দুপুরে দমদমে নামে হেমন্তের দেহ। দেহ নিয়ে আসেন হেমন্তর কাকা হারু রায়, পড়শি ধরণী রায়-সহ আরও অনেকে। ছিলেন ইন্দাস থানার পুলিশ কর্মীও।

Advertisement

এ দিকে, রোল গ্রামে ছোয়ানি পাড়ায় সকাল থেকেই কালী মন্দিরের সামনে ফাঁকা মাঠে ম্যারাপ বাঁধার কাজ চলছিল। নৃসিংহ স্মৃতি ক্লাবের সম্পাদক স্বপন বাগদি বলেন, ‘‘হেমন্তর মৃত্যুতে গ্রামের সবাই শোকাহত। সবাই যাতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন, সে জন্য ছোট্ট মঞ্চ করে তার উপরে হেমন্তের দেহ রাখা হবে।’’ দেহ আসতে রাত হয়ে যাওয়ার চিন্তায় স্থানীয় বড়পুকুর শ্মশানে আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ছেলে ফিরবে বলেছিল। কিন্তু ফিরছে কফিন-বন্দি তাঁর দেহ। তাই শোক সামলে সকাল থেকে দরজায় ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন হেমন্তর মা রীতা রায়, বাবা আনন্দ রায়। ক’দিন ধরে কান্নায় বিরাম নেই দু’বছর আগে হেমন্তর বিয়ে করে ঘরে আনা স্ত্রী বিষ্ণুর। তাঁর ছ’মাসের মেয়ে রাধিকা অবাক চোখে সবার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। পরে তাঁদের বাড়িতে আসেন জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, বিধায়ক গুরুপদ মেটে প্রমুখ। বিধায়ক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো হেমন্তর স্ত্রীকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। দলের কর্মীরা পরিবারটির পাশে আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন