‘নাসা’ যাওয়ার ডাক পেল পুরুলিয়ার কিশোরী

তেলকলপাড়ার বাসিন্দা অভিনন্দা পুরুলিয়া শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। বাবা সজল ঘোষ ও মা সুস্মিতা রায়চৌধুরী শহরের দু’টি স্কুলে ইংরেজি পড়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৭
Share:

অভিনন্দা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

বড় হয়ে সে মহাকাশে যেতে চায়। তার আগেই, পুরুলিয়া শহরের কিশোরী অভিনন্দা ঘোষের হাতে যেন চাঁদ এসে হাজির। দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থা আয়োজিত বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে সফল হয়ে সুযোগ মিলেছে ‘নাসা’-য় পাড়ি দেওয়ার। নবম শ্রেণির ছাত্রীটি বলছে, ‘‘খবরটা পাওয়ার পরে আনন্দে কিছু ক্ষণ কথাই বলতে পারিনি। নাসায় যাওয়ার স্বপ্ন এত দ্রুত সফল হবে ভাবতেই পারছিলাম না।”

Advertisement

তেলকলপাড়ার বাসিন্দা অভিনন্দা পুরুলিয়া শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। বাবা সজল ঘোষ ও মা সুস্মিতা রায়চৌধুরী শহরের দু’টি স্কুলে ইংরেজি পড়ান। চাঁদে যাওয়ার ব্যাপারে ‘ন্যাক’ ছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাসের কম্বলের। তবে সে গিয়েছিল ছাদে। জাঁদরেল মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে বাঁচতে বিচ্ছু ছেলে ঘাপটি মেরেছিল চিলেকোঠার ঘরে। আর নাস্তানাবুদ হয়েছিল টেনিদারা। সজলবাবুরা জানাচ্ছেন, অভিনন্দার কিন্তু ছোট থেকে পড়াশোনাই ধ্যানজ্ঞান। চতুর্থ শ্রেণি থেকে প্রতি বছর অলিম্পিয়াডে বসছে। আলাদা ভাবে কোনও প্রশিক্ষণ নেয়নি। অভিনন্দার কথায়, ‘‘পরীক্ষা নিয়ে এখন আর ভয়ডর করে না। পরীক্ষাটা উপভোগই করেছি।” জানাচ্ছে, অল্প সময়ে অনেকগুলি উত্তরের মধ্যে থেকে ঠিকটা বেছে নিতে হয়েছিল পরীক্ষায়। আর প্রস্তুতিতে যাবতীয় সাহায্য করেছেন স্কুলের শিক্ষকেরাই।

কৃতী ছাত্রী হিসেবে স্কুলে তার নামডাক রয়েছে। গত নভেম্বরে দিল্লির বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে স্কুল স্তরের পরীক্ষায় বসেছিল অভিনন্দা। সফল হয়ে সেখান থেকে রাজ্যস্তরে। অগস্টের গোড়ায় দিল্লিতে ইসলামিক কালচার সেন্টারে সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষাটি হয়।

Advertisement

অভিনন্দার স্কুলের শিক্ষক তথা ওই বেসরকারি সংস্থার পরীক্ষার কো-অর্ডিনেটর সুদীপচন্দ্র দাস জানান, সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষায় প্রায় ১৮ লক্ষ প্রতিযোগী ছিল। সফলদের শিক্ষামূলক ভ্রমণে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ (নাসা) ‘কেনেডি স্পেস সেন্টারে’ নিয়ে যাবে সংস্থা। দলে সুযোগ পেয়েছে অভিনন্দা। স্বাধীনতা দিবসে সংস্থার তরফে স্কুলে ফোন করে সেই খবর দেওয়া হয়। তবে, কবে রওনা হতে হবে সেই কথা এখনও জানানো হয়নি।

স্কুলের পড়াশোনার বাইরে নিয়ম করে পড়ে বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন বই ও প্রবন্ধ। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘মিশন মঙ্গল’ নামে হিন্দি ছবি। মঙ্গল-অভিযানে একঝাঁক মহিলা বিজ্ঞানীর ভূমিকা তুলে ধরেছেন পরিচালক। ইচ্ছা থাকলেও পড়ার চাপে সেই ছবি দেখা হয়নি অভিনন্দার। তবে তাকে অনুপ্রানিত করেছে ‘চন্দ্রযান ২’ অভিযানে মহিলা বিজ্ঞানীদের ভূমিকা। মেধাবী ছাত্রীটি বলে, ‘‘খবরের কাগজে দেখেছি চন্দ্রযান অভিযানে কী ভাবে নিজেদের দায়িত্ব সুষ্ঠু ভাবে পালন করেছেন মহিলা বিজ্ঞানীরা।”

তারও স্বপ্ন, লাল মাটির দেশ থেকে এক দিন পাড়ি জমাবে লাল রঙের গ্রহে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন