ধর্ষণের নালিশ পুরুলিয়ায়

স্টেশনের নিরাপত্তায় প্রশ্ন

ট্রেন ধরার জন্য বসেছিলেন প্ল্যাটফর্মে। প্রথমে ভুল বুঝিয়ে শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এক যুবক। পরে ধর্ষণ করে আরও এক জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৫
Share:

এই শৌচালয়েই ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র

ট্রেন ধরার জন্য বসেছিলেন প্ল্যাটফর্মে। প্রথমে ভুল বুঝিয়ে শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এক যুবক। পরে ধর্ষণ করে আরও এক জন। বৃহস্পতিবার রাতে এ ভাবে পরপর তাঁর উপরে নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাঁচির তরুণী। আর এই ঘটনাতেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে পুরুলিয়া স্টেশনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে। শুধু তাই নয়, ঘটনার সূত্র ধরেই সামনে এসেছে, স্টেশন চত্বরের সিসি ক্যামেরাগুলি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে অনেক দিন ধরেই।

Advertisement

ওই রাতে পুরুলিয়ায় রেলপুলিশের কাছে ঝাড়খণ্ডের রাঁচির ওই তরুণী অভিযোগ করেন, বাড়ি ফেরার ট্রেন দেরিতে চলায় তিনি এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে একা বসে অপেক্ষা করছিলেন। তখনই এক যুবক এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমায়। অভিযোগ, সেই যুবক ভুল বুঝিয়ে তাঁকে প্ল্যাটফর্মের বাইরে শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। সে রাতেই স্টেশন চত্বরে আর এক যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।

এই ঘটনায় শুক্রবার রমেশ তিওয়ার নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে রেলপুলিশ। রমেশের স্টেশন চত্বরে একটি খাবারের দোকান রয়েছে। তাকে জেরা করে সে দিনই সেলিম সওদাগর নামে আর এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। রেলপুলিশের একটি সূত্রের খবর, অভিযুক্ত রমেশ স্টেশনের বাইরের শৌচালয়টি চালানোর দায়িত্বেও রয়েছে। সেই সুযোগই সে ব্যবহার করেছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এসআরপি (খ়ড়্গপুর) অমিতকুমার সিংহ বলেন, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ শনিবার পুরুলিয়া আদালত রমেশকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। রবিবার সেলিমকে আদালতে তোলা হলে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার এক, দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের নানা জায়গায় সিসিটিভির নজরদারি রয়েছে। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে থাকা আরপিএফ অফিস থেকে মনিটরে নজর রাখা হয়। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে ঘটল এমন ঘটনা? আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেকেরও বেশি সময় স্টেশনের সিসি ক্যামেরাগুলি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেগুলি মেরামতির কোনও ব্যবস্থা কেন হয়নি, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।

স্টেশন চত্বরে এমন ঘটনা রেলপুলিশের কর্তব্যরত কর্মীদের নজর এড়িয়ে গেল কী ভাবে? রেলপুলিশের এক আধিকারিক দাবি করেন, ‘‘কেউ যদি ভুল বুঝিয়ে কাউকে কোথাও নিয়ে যায় তাহলে তা চট করে বোঝা সম্ভব নয়। শৌচাগারের দিকে যাওয়ায় আরও সন্দেহ হয়নি।’’ এসআরপি (খড়গপুর) অমিতকুমার সিংহ বলেন, ‘‘সিসিটিভিগুলির দেখভাল করে রেল। সেগুলি যাতে দ্রুত চালু করা যায়, তার জন্য আমরা ফের চিঠি লিখব। টহলদারিও বাড়ানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন