চালে ছাঁটের হিসেব নিয়ে বিতর্ক

খাদ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ পুরুলিয়ার চালকল মালিকদের

কত ধানে কত চাল, বিতর্ক তা নিয়েই।পুরুলিয়ার ১২টি চালকল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চাল কেনে। কেনার সময়ে বরাবরই ধানের মধ্যে থাকা আবর্জনার জন্য ওজনে কিছুটা বাদ দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০২:২০
Share:

দেখেশুনে: ধান বাছাই করে কেনার কাজ চলছে পুরুলিয়া ২ ব্লকের হাতোয়াড়া কৃষক বাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

কত ধানে কত চাল, বিতর্ক তা নিয়েই।

Advertisement

পুরুলিয়ার ১২টি চালকল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চাল কেনে। কেনার সময়ে বরাবরই ধানের মধ্যে থাকা আবর্জনার জন্য ওজনে কিছুটা বাদ দেওয়া হয়। চালকল মালিকদের দাবি, ১ ক্যুইন্টাল ধান পিছু সরকারকে যে পরিমাণ চাল দিতে হয়, ওই ধান ভেঙে আদৌ সেটা পাওয়া যায় না। সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রীর কাছে এই অভিযোগ জানান তাঁরা।

জেলায় ধান কেনার হাল হকিকত সরেজমিন দেখতে গত শনিবার পুরুলিয়ায় আসেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্তা এবং বিভিন্ন সমবায় ও চালকল মালিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখানে চালকল মালিকেরা দাবি করেন, ক্যুইন্টাল প্রতি ৬ কিলোগ্রাম করে আবর্জনা বাবদ বাদ দিতে হবে। দর কষাকষির শেষে সেটা নেমে দাঁড়ায় ক্যুইন্টাল প্রতি ৪ কিলোগ্রামে। বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো অবশ্য সেই সময়ে জানিয়েছিলেন, এই ৪ কিলোগ্রামের হিসেব ধরাবাঁধা কিছু নয়।

Advertisement

কিন্তু তার পরেও চলছে বিতর্ক। জেলার চালকল মালিকদের মুখপাত্র মনোজ ফোগলা বলেন, ‘‘১ ক্যুইন্টাল ধান থেকে সরকারকে ৬৮ কিলোগ্রাম চাল দিতে হয়। কিন্তু যে ধান আমরা কিনি, তা থেকে ক্যুইন্টাল পিছু মেরেকেটে ৬৩ কিলোগ্রাম চাল হয়। সেই জন্যই আমরা ৬ কিলোগ্রাম করে ছাঁট বাদ দেওয়ার কথা বলেছিলাম।’’

পুরুলিয়া ২ ব্লকের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রাজপতি মাহাতোর অবশ্য দাবি, ‘‘জেলায় বেশির ভাগই উঁচু কৃষিজমি বা বাইদ। সেখানে মোটা ধানের চাষ হয়। ওই ধানে কখনওই ৩ থেকে ৪ কিলোগ্রামের বেশি ছাঁট হওয়ার কথা নয়।’’ তাঁর অভিযোগ, কার্যক্ষেত্রে চালকল মালিকেরা সেই হিসেব মানছেন না। মন্ত্রীর বৈঠকের পরেও বেশি ছাঁট বাদ দিতে চাওয়া নিয়ে ঝালদার চালকলে চাষিদের একাংশের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে বলে তিনি দাবি করেন।

তবে ছাঁদের ধরাবাঁধা হিসেব হলে যে কিছু মুশকিল রয়েছে, সে কথা মেনে নিচ্ছেন চাল কেনার সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, চাষিরা খেতের ধান নিয়ে এলে তাতে বেশি ছাঁট থাকার কথা নয়। কিন্তু কেউ আগে থেকেই বেশি খাদ ধানে মিশিয়ে এনে ৪ কিলোগ্রাম হিসেবের ছুতো ধরে বসতে পারেন।

চালকল মালিকদের একাংশ জানান, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ঠিক করেছেন, বস্তা থেকে কিছুটা ধান নিয়ে গড় হিসেব করে তাঁরা দেখে নেবেন তাতে কতটা ছাঁট হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন