প্রাণ কাড়ল ডাম্পার, ধুন্ধুমার মল্লারপুরে

নিজের দোকান থেকে মাল তুলে মোটরবাইকের পিছনে চড়িয়ে সামান্য এগিয়ে ছিলেন। নিমিষে পিষে দিয়ে তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল পিছন থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি ডাম্পার। মঙ্গলবার সকালে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মল্লারপুরে ডাকবাংলো মোড়ে রেলগেটের কাছে মাসড়া-মল্লারপুর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৭:৫৩
Share:

দুর্ঘটনার পরে পথেই পড়ে রয়েছে আমজাদ মুনশির (৪৮) দেহ। মঙ্গলবার সকালে মল্লারপুরে ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

নিজের দোকান থেকে মাল তুলে মোটরবাইকের পিছনে চড়িয়ে সামান্য এগিয়ে ছিলেন। নিমিষে পিষে দিয়ে তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল পিছন থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি ডাম্পার।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মল্লারপুরে ডাকবাংলো মোড়ে রেলগেটের কাছে মাসড়া-মল্লারপুর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তায়। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আমজাদ মুনশির (৪৮)। তাঁর বাড়ি মল্লারপুরের ফতেপুর এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আমজাদের ডাকবাংলো মোড়েই একটি হোলসেল সামগ্রীর দোকান রয়েছে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তাঁর ওই দোকান থেকে কয়েক মিটার দূরেই। এ দিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিট নাগাদ কিছু মাল নিয়ে তিনি দোকান বন্ধ করে নিজের মোটরবাইকে চেপেছিলেন। তারাপীঠের একটি দোকানে তাঁর ওই মাল পৌঁছনোর কথা ছিল। সে উদ্দেশে মোটরবাইক চালিয়ে এগোতেই পিছন থেকে এসে আমজাদকে ধাক্কা মারে একটি ডাম্পার। মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়া ওই ব্যক্তির মাথা পিষে দিয়ে চলে যায় ডাম্পারটি। সেটি এত দ্রতগতিতে ছিল যে চালক ব্রেক কষলেও এসে থামে একেবারের রেললাইনের গায়ে।

Advertisement

এ দিকে, ঘটনার পরেই ধুন্ধুমার বেঁধে যায় এলাকায়। হাতে নাতে ধরে ফেলে ডাম্পার চালককে বেধড়ক মারধর করেন ক্ষিপ্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে থাকা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের একটি চেকপোস্টে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। ভয়ে পালিয়ে যান চেকপোস্টের কর্মীরা। যান নিয়ন্ত্রণে গাফিলতির অভিযোগে পুলিশের সঙ্গেও তাঁদের একপ্রস্থ ধাক্কাধাক্কি হয়। ঘটনার জেরে রেললাইন থেকে ডাম্পারটিকে সরাতে না পারায় প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ডাউন লাইনে মল্লারপুর স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং আপলাইনে মল্লারপুর স্টেশন ঢোকার আগে সাহেবগঞ্জ–বর্ধমান প্যাসেঞ্জার ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এসডিপিও (রামপুরহাট) কমল বৈরাগ্য, রামপুরহাটের এসআই দেবীগোপাল কুণ্ডু, রেল পুলিশের সাঁইথিয়া থানার ওসি বিকাশ মুখোপাধ্যায়। তাঁরা রেললাইনের উপরে দু’ফুট মতো ঢুকে পড়া ডাম্পারটি সরানোর ব্যবস্থা করেন। চালককে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বচসা বেঁধে যায়। এলাকাবাসীর দাবি, স্কুল-অফিস টাইমে শহরের রাস্তায় পুলিশকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ব্যাপারে পুলিশের কোনও নজরদারি না থাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে তাঁদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের কাছে এ দিন আরও দু’টি দাবি করেছেন। এক, রেলগেট পার করার সময়ে গাড়ির সহকারীকে গাড়ি থেকে নেমে ধীর গতিতে গাটিটিকে রেলগেট পার করাতে হবে। দুই, রেলগেট সংলগ্ন রেললাইনের আশপাশে ছড়িয়ে থাকা পাথর ঠিক জায়গায় বিছিয়ে দিতে হবে। পুলিশের কর্তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ডাম্পার চালককে উদ্ধার করে আটক করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন