কর্মসূচি: রাতের বেলায় চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোয় লোক সমাগম হু হু করে বেড়ে যায়। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি ছাড়াও বাইরের লোকেদের আনাগোনায় মুখরিত হয় মণ্ডপ। অস্থায়ী খাবারের দোকান, আইসক্রিম, ফুচকা স্টল, ঠান্ডা পানীয়ের দোকান বসে। কিন্তু, প্রায় সব দোকানের সামনেই জমে থাকে আবর্জনা। সব জঞ্জাল পরিস্কারও করতে পারেন না পুরসভার কর্মীরা। তাতে দৃশ্য দূষণের পাশাপাশি তৈরি হয় রোগবালাইয়ের সম্ভাবনাও।
সে কথা মাথায় রেখে নিজেদের প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ঝাড়ু, দস্তানা, বেলচা হাতে তুলে নিল পুজো কমিটির জনা ২৪ সদস্য। রামপুরহাট কালিসাঁড়া পাড়া আমতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যেরা শপথ নিল, জঞ্জাল মুক্ত রামপুরহাট শহর গড়ার। সদস্যদের কেউ হাইস্কুলের শিক্ষক, কেউ কলকাতা পুলিশের কর্মী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা খবরের কাগজ বিক্রেতা। ওই দলে ছিলেন ব্যবসায়ী থেকে স্কুল, কলেজের পড়ুয়ারাও। পাড়ার প্রতিমা বিসর্জনের রাতে ওই সদস্যদের পরণে ছিল মিশন নির্মল বাংলার বীরভূমের লোগো দেওয়া গেঞ্জি। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত বারোটা চলে শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে পড়ে থাকা জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ।
এমন কর্মসূচির জন্য পুজো কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মন্ত্রী কৃষি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রামপুরহাট পুরসভার পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি পুজোর উদ্যোক্তাদের পাঁচ হাজার এক টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন। উপস্থিত বিডিও (রামপুরহাট ১) নীতিশ বালা, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল ঘোষাল-সহ অন্য আধিকারিক থেকে শুরু পুজো এবং মহরম সমন্বয় কমিটির কর্তারা মঞ্চ থেকে ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন এমন কর্মসূচি। বিডিও নীতিশ বালার কথায়, ‘‘ভাল উদ্যোগ। এ ভাবে মানুষকে সচেতন নাগরিকের মতো কাজ করতে এগিয়ে আসতে হবে।’’
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অন্য পুজো কমিটির কর্মকর্তারাও। রামপুরহাট হাটতলা সর্বজনীনের সম্পাদক সুখেন দত্তের কথায়, ‘‘অল্প বাজেটে সাধু উদ্যোগ।’’ পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারী বলেন, ‘‘পুরসভার লক্ষ্য হল গ্রিন সিটি তৈরি করা। এই ভাবে শহরবাসী যদি পাশে থাকেন, তা হলে সে কাজে অবশ্যই সাফল্য আসবে।’’ সকলের সমর্থনে আপ্লুত কালিসাঁড়া পাড়া আমতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘আগামী দিনেও এমন কর্মসূচি নেওয়া হবে।’’