গত মরসুমে খরার মুখোমুখি হয়েছে পুরুলিয়া। এ বার তাই যে কোনও ভাবে বৃষ্টির জল ধরে রাখতে হবে। শনিবার বিকেলে পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে জেলা কৃষি দফতরের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তাই দিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। জানা গিয়েছে, বৈঠকে তিনি গতবারের ভয়াবহ খরার উদাহরণ টেনে বলেছেন— ‘‘সামনের বর্ষার মরসুমে বৃষ্টির জল যতটা সম্ভব ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ উল্লেখ্য, গত মরসুমে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে টানা তিনদিন প্রচুর বৃষ্টি হলেও সেই জল ধরে রাখা যায়নি। তারপরে আর সে ভাবে বৃষ্টি পায়নি পুরুলিয়া। ফের তেমন পরিস্থিতি হলে দফতর আগাম কী ধরনের সতর্কতা নিতে পারে, এই বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জমির উৎপাদনশীলতা অনুসারে ফসল নির্বাচন, জৈব সারের ব্যবহার, জেলায় ফল চাষ ও ডাল চাষ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। পাশাপাশি খরা সহনশীল ধানের চাষ করার উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় যে ১৩টি কৃষি খামার রয়েছে, সেখানেও বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে চাষ করার নির্দেশ দেন পূর্ণেন্দুবাবু।
বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত বছর এই জেলায় খরা হয়েছে। এ বছর যাতে তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয় তার জন্য আগাম পরিকল্পনা নেওয়ার লক্ষ্যেই এই বৈঠক। আমরা একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছি।’’ এ দিকে, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর যাঁরা সরাসরি বা পরোক্ষ ভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত, তারা যাতে নিজেদের পরিকল্পনাগুলি একসঙ্গে বসে বিনিময় করেন, সে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের কৃষি আধিকর্তা পরিতোষ ভট্টাচার্য। তিনি শনিবার এক আলোচনাসভায় এ কথা জানান।
শনিবার কৃষি বিষয়ক একটি কর্মশালায় মন্ত্রী ও দফতরের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া অভিযোগ করেন, কৃষি খামারগুলির বেহাল হয়ে রয়েছে।
রবিবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের হাতোয়াড়া কৃষি খামার পরিদর্শন করে দফতরের আধিকারিকদের সেখানে বীজ উৎপাদনের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন কৃষিমন্ত্রী। জেলা উপকৃষি অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্ত্রী পরিদর্শনের পরে সবুজ সারের এলাকা বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন।’’