শিক্ষক নেই, তিন মাস বন্ধ বরাবাজারের স্কুল

শিক্ষক না মেলায় গোড়ায় স্কুলটি চালু হতে দেরি হয়। অবশেষে ২০১৫ সাল থেকে স্কুল চালু হয়। তখন এক জন মাত্র শিক্ষক পড়াতে আসতেন। কিন্তু তিনিও অনিয়মিত ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বরাবাজার শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০১:২৩
Share:

তালা: ভাগাবাঁধ অঞ্চলের দুবরাজপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র

শিক্ষক নেই। সে কারণে তিন মাস ধরে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বরাবাজারের ভাগাবাঁধ অঞ্চলের দুবরাজপুর জুনিয়র হাইস্কুল। খোঁজ করতে জেলা কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, স্কুলটি তাড়াতাড়ি খোলার চেষ্টা হচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, সর্বশিক্ষা মিশন অভিযান প্রকল্পের অর্থে তৈরি হওয়ায় ওই স্কুলটি ২০১৫ সালে চালু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা যুধিষ্ঠির মাহাতো, সন্তোষ মাহাতো, বাবুলাল মাঝি বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করে ছেলেমেয়েদের দু’কিমি দূরের হাইস্কুলে পড়তে যেতে হতো। জুনিয়র হাইস্কুল হলেও শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানিয়েছিলেন, পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ধাপে ধাপে ভবিষ্যতে এটিই হাইস্কুলে উন্নীত করা হবে। তাই গ্রামে স্কুল তৈরি হওয়ায় সবাই খুশি হয়েছিলাম।’’

বাসিন্দাদের জানাচ্ছেন, শিক্ষক না মেলায় গোড়ায় স্কুলটি চালু হতে দেরি হয়। অবশেষে ২০১৫ সাল থেকে স্কুল চালু হয়। তখন এক জন মাত্র শিক্ষক পড়াতে আসতেন। কিন্তু তিনিও অনিয়মিত ছিলেন। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণি মিলিয়ে দুই ক্লাসে প্রায় ২৫ জন পড়ুয়া ছিল। স্কুলে মিড-ডে মিলও চালু ছিল। কিন্তু জুন মাস থেকে ওই এক মাত্র শিক্ষকও স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন। তখন পড়ুয়ারা বিপাকে পড়ে যায়। সেই থেকে স্কুলের তালা আর খোলা হয়নি।’’

Advertisement

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখনই জানা যায়, ওই শিক্ষক শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ব্লক অফিসের এক আধিকারিক পড়ুয়াদের আশপাশের কোন স্কুলে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। ভর্তি করতে সমস্যা হলে প্রশাসন দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছিলেন। পড়ুয়াদের কথা ভেবে বাধ্য হয়ে অভিভাবকেরা তাদের দু’কিমি দূরে আদাবনা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তি করাতে বাধ্য হন। বাসিন্দাদের আক্ষেপ, গ্রামে স্কুল থেকেও নেই। পড়ুয়াদের সমস্যা সেই থেকেই গেল। ভাগাবাঁধ গ্রামের বাসিন্দা কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ভগীরথ মাহাতো বলেন, ‘‘দুবরাজপুরের জুনিয়র হাইস্কুলটি ফের চালু করার জন্য আমরা সম্প্রতি বিডিওকে আবেদন জানিয়েছি।’’

বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দুবরাজপুর জুনিয়র হাইস্কুলের সমস্যার কথা জানি। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে শুনেছি, ওই স্কুলের দায়িত্বে দু’জন শিক্ষক রয়েছেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পড়ানোর কাজ চালিয়ে আসছিলেন। অন্য জন, সম্ভবত বিএড করতে ছুটি নিয়েছেন। আরও বিশদে জানতে আমি খোঁজ নেব।’’

জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শুষেন মাঝি বলেন, ‘‘শিক্ষকের অভাবে বরাবাজারের ওই স্কুল বন্ধ রয়েছে। এক জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পঠনপাঠন চালিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্কুলে তিনি অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন। শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় আর স্কুলে আসতে পারেননি। ডেপুটেশনে অন্য কোনও শিক্ষককে ওই স্কুলে পাঠানোর চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন