অনুব্রত মন্ডল।
গরিবদের বাড়ি থেকে স্কুলের মাঠ, ব্রাহ্মণী নদীর উপরে দেবঘাটে সেতু— একগুচ্ছ উন্নয়নের কথা বলে নলহাটির মন জয়ের চেষ্টা করলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকার ৬টি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতির ১৭টি আসনের মধ্যে ১৪টি সিপিএম, ২টি ফরওয়ার্ড ব্লক এবং একটি কংগ্রেস পেয়েছিল। সেখানেও তৃণমূলের কোনও সদস্য নির্বাচিত হননি। জেলা পরিষদের দুটি আসন সিপিএম দখল করে। এমনই ছবি নলহাটি ২ ব্লকের। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এই এলাকা থেকে শতাব্দী রায় সিপিএম প্রার্থীর চেয়ে কম ভোট পেয়েছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের জোট প্রার্থী কংগ্রেসের মিল্টন রসিদ এই এলাকা থেকেই তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের চেয়ে প্রায় ছ’হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই করুণ ছবি পাল্টাতে উঠে পড়ে লেগেছে জেলা তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব।
এই আবহে মঙ্গলবার নলহাটি ২ ব্লকে দলের মহিলা সম্মেলনে যোগ দেন অনুব্রত। বিরোধীদের সমালোচনার পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে এলাকায় ২৫০০ বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে জুড়ে দেন লোহাপুর গার্লস হাইস্কুলের মাঠ সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতির মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা অনুমোদনের আশ্বাস। এর বাইরে এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ব্রাহ্মণী নদীর উপর দেবঘাটে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলেও আশ্বাস দেন অনুব্রত।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে জেলা তৃণমূলের সভাপতি বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের এমএলএ দেননি। কেন দেননি, সেটা আপনারা আমার চেয়ে ভাল জানেন। তবে এটা বলব আপনারা ভুল করেছেন। তবুও আমরা কোনও দল না দেখে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা থাকতে দেব না।’’ এরপরেই অনুব্রত উন্নয়নের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার জন্য দলের মহিলা কর্মীদের আবেদন জানান। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করার সময় মহিলাদের সামনের সারিতে থাকার নির্দেশও দেন। অনুব্রতর কথায়, ‘‘কাউকে ভয় পাবেন না।’’ এ দিনও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণে ‘দালালি’ বা পয়সার লেনদেন সম্পর্কে সতর্ক করে দেন অনুব্রত। তেমনটা হলে যে স্তরের নেতা-কর্মীই হোক, রেয়াত করা হবে না— তার ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এ দিনের সভায় ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, ব্লক সভাপতি বিভাষ অধিকারী, নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন শামস, প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মাল।