প্রসবের পরেই পরীক্ষায় ছাত্রী

কস্তুরীবালার দাদা সমীরণ কুমার বলেন, ‘‘বোন সন্তান সম্ভবা ছিল। তারমধ্যেই পরীক্ষাও দিচ্ছিল। এ দিন সকালে প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বোনকে কোটশিলা হাসপাতালে ভর্তি করি। বোন কিন্তু, জেদ ধরে পরীক্ষা দেবেই।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোটশিলা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০১:০২
Share:

হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেই সেই প্রসূতিই বসলেন পরীক্ষায়। বিছানার কাছে চেয়ারে বসে ইতিহাসের উত্তরও লিখলেন। মঙ্গলবার কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিলেন কস্তুরীবালা কুমার।

Advertisement

ঝালদা ২ ব্লকের চ্যেকা হাইস্কুলের ছাত্রী কস্তুরীবালা কুমারের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল এই ব্লকেরই বেগুনকোদর হাইস্কুলে। কস্তুরীবালার দাদা সমীরণ কুমার বলেন, ‘‘বোন সন্তান সম্ভবা ছিল। তারমধ্যেই পরীক্ষাও দিচ্ছিল। এ দিন সকালে প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বোনকে কোটশিলা হাসপাতালে ভর্তি করি। বোন কিন্তু, জেদ ধরে পরীক্ষা দেবেই।’’

এর পরে তাঁরা বিষয়টি চ্যেকা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানান। তাঁকে জানান, একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে বলে কস্তুরীবালা পরীক্ষা দিতে চাইছে। তারপরে তিনিই বিভিন্ন দফতরের যোগাযোগ করে ওই ছাত্রীর হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

Advertisement

চ্যেকা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন বৈদ্য বলেন, ‘‘কস্তুরীবালার পরিবারের তরফে আমাদের জানানো হয় যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিতে চায়। তখন আমরা বেগুনকোদর হাইস্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে হাসপাতালে পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। পরীক্ষা কেন্দ্রের তরফে গার্ড, প্রশ্ন ও উত্তরপত্র এবং সিভিক ভলান্টিয়াদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই সব তোড়জোড় যখন চলছে, সেই সময় সকাল ন’টা নাগাদ কস্তুরীবালা হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। তারপর নির্দিষ্ট সময়েই পরীক্ষায় বসেন তিনি। সমীরণ বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিতসক ও নার্সেরা বোনকে মানসিক ভাবে প্রচণ্ড সহায়তা করেছেন।’’ কস্তুরীবালাও জানিয়েছেন, সবাই যে ভাবে পাশে দাঁড়ান, তাতেই শারীরিক দুর্বলতা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসার শক্তি পেয়েছি।’’

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির সদস্য বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘ঝালদা ২ ব্লক নারী শিক্ষার নিরিখে পিছিয়ে পড়া বলে চিহ্নিত। কিন্তু সন্তানের জন্ম দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যে ভাবে ওই ছাত্রী পরীক্ষায় বসেছেন, তাতে তাঁর মনের জোরের প্রশংসা করতেই হয়। মানবিক কারণেই সবাই তাঁর পাশে থেকেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন