ফের না ধাক্কা আসে বাজারে, শঙ্কা বাঁকুড়ায়

নতুন বছর এসে গেল। কিন্তু বাঁকুড়ার বাজার ঢুঁড়েও নববর্ষের কার্ড সে ভাবে চোখে পড়ল না। তার জায়গা বরং দখল করে নিয়েছে হোয়্যাটস অ্যাপ, ফেসবুক।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৭
Share:

শেষবেলা: বদলে যাচ্ছে অনেককিছু। কিন্তু হালখাতার চাহিদা এখনও রয়েছে।

নতুন বছর এসে গেল। কিন্তু বাঁকুড়ার বাজার ঢুঁড়েও নববর্ষের কার্ড সে ভাবে চোখে পড়ল না। তার জায়গা বরং দখল করে নিয়েছে হোয়্যাটস অ্যাপ, ফেসবুক। পয়লা বৈশাখের ক’দিন আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নববর্ষের শুভেচ্ছার ছড়াছড়ি। তবে ভার্চুয়াল জগতের মিষ্টিতে তো আর পেট ভরে না। তাই নতুন বছরের উৎসবের মেজাজ যথারীতি অটুট রয়েছে হাটে-বাজারে। পয়লা বৈশাখে মুখমিষ্টি করানোর জন্য চৈত্র সংক্রান্তির দিনেই বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের লাইন দিতে দেখা গিয়েছে। নতুন বছরে নতুন পোশাক পরার জন্য অনেকেই চৈত্রসেলে জমিয়ে বাজার সেরেছেন।

Advertisement

নতুন বছরের প্রথম দিনে মিষ্টি মুখ করার চল বাঙালির ঘরে ঘরে। রাজভোগ থেকে রসমালাই— সব ধরনের মিষ্টিরই চাহিদা ব্যাপক। তবে ওই সব মিষ্টিকে ছাপিয়ে যায় মোতিচুরের লাড্ডুর চাহিদা। বাঁকুড়া শহরের রানিগঞ্জ মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী জয়ন্ত বরাটের কথায়, “নববর্ষ উপলক্ষে মোতিচুরের লাড্ডুর চাহিদা তুঙ্গে। এক দিন আগে থেকেই মানুষ লাড্ডু কিনতে ভিড় করছেন। চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি।”

একই কথা শোনাচ্ছেন রামপুর এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী নবকুমার নাগ। বাংলা বছরের প্রথম দিনই বাঁকুড়ার বহু দোকানে হাল খাতার আয়োজন করা হয়। সেই উপলক্ষে বহু ব্যবসায়ীই বরাত দিয়ে লাড্ডু তৈরি করান। নবকুমারবাবু জানাচ্ছেন, বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাজার ছয়েক লাড্ডু তৈরির বরাত পেয়েছেন তিনি। সাধারণ লোকজনের জন্যও লাড্ডু তৈরি হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মিষ্টির দরও বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছে বাঁকুড়ার বাজারে। বিশেষ করে দইয়ের দাম নববর্ষের দিন বেশ খানিকটাই চড়েছে।

Advertisement

নববর্ষে লাড্ডুরও বিকল্প নেই।

ভোজন রসিক বাঙালির কথা মাথায় রেখে নববর্ষের বাজার ধরতে নতুন ধরনের ভাবনা-চিন্তা শুরু করছেন রেস্তোরাঁর মালিকেরাও। শহরের চাঁদমারিডাঙা ও লালবাজারের দু’টি প্রথম শ্রেণির রেস্তোরাঁয় নববর্ষ উপলক্ষে ‘হ্যাপি আওয়ার’ চালু হচ্ছে। রেস্তোরাঁগুলির মালিক প্রসেনজিৎ দত্ত জানান, বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়ার বিলে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে হ্যাপি আওয়ার উপলক্ষে। সেই সঙ্গে এই বিশেষ দিনটিতে রেস্তোরাঁয় আসা অতিথিদের জন্য কমপ্লিমেন্টারি মিষ্টি খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করেছেন তাঁরা।

মাস পাঁচেক আগের কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জেরে বড় ধাক্কা খেয়েছিল ব্যবসায়ী মহল। সদ্য সেই ধাক্কা সামলে নতুন করে পথ চলা শুরু করেছে বাজার। বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপার কথায়, “বড় নোট বাতিল ও ব্যাঙ্কে টাকার জোগানের অভাবের জেরে গত নভেম্বর থেকেই বাজারের হাল খুব খারাপ ছিল। তবে চৈত্র সেলের বাজারে জমাটি ভিড় আমাদের আশঙ্কা অনেকটাই কাটিয়ে দিয়েছে।”

নতুন বছরে আরও কোনও ধাক্কা যাতে না আসে, সেই প্রার্থনাই করছেন ব্যবসায়ীরা। লক্ষ্মীলাভের আশা নিয়ে আজ হালখাতা খুলবেন তাঁরা।

বর্ষ বরণের আগের দিন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় ছবিগুলি তুলেছেন সুজিত মাহাতো ও অভিজিৎ সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন