শিক্ষককে বেঁধে রেখে লুঠপাট পুরুলিয়ায়

শহরের একটি বাড়িতে মাঝরাতে ঢুকে গৃহকর্তাকে পিছমোড়া করে বেঁধে লুঠপাট চালাল তিন দুষ্কৃতী। রবিবার রাতে পুরুলিয়া শহরের সুফলপল্লি এলাকার ঘটনা। বাড়ির কর্তা, পুরুলিয়া ২ ব্লক এলাকার একটি হাইস্কুলের শিক্ষক বৈদ্যনাথ মাহাতো জানান, অসুস্থ ছোট মেয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে তুলে আনা বেশ কয়েক হাজার টাকা এবং কয়েক ভরি গয়না নিয়ে গিয়েছে ডাকাতেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪০
Share:

এখনও আতঙ্কে নিয়তিদেবী ও নীলাঞ্জনা। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।

শহরের একটি বাড়িতে মাঝরাতে ঢুকে গৃহকর্তাকে পিছমোড়া করে বেঁধে লুঠপাট চালাল তিন দুষ্কৃতী। রবিবার রাতে পুরুলিয়া শহরের সুফলপল্লি এলাকার ঘটনা। বাড়ির কর্তা, পুরুলিয়া ২ ব্লক এলাকার একটি হাইস্কুলের শিক্ষক বৈদ্যনাথ মাহাতো জানান, অসুস্থ ছোট মেয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে তুলে আনা বেশ কয়েক হাজার টাকা এবং কয়েক ভরি গয়না নিয়ে গিয়েছে ডাকাতেরা।

Advertisement

সুফলপল্লি শহরের এক প্রান্তে। সেখানে স্ত্রী নিয়তিদেবী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন বৈদ্যনাথবাবু। রবিবার তাঁদের বাড়িতে এসেছিলেন বৈদ্যনাথবাবুর শ্যালক। নিয়তিদেবী জানান, তিনি রান্নাঘর লাগোয়া ঘরে বছর সাতেকের মেয়ে নীলাঞ্জনাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। পাশের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তাঁর স্বামী, ভাই এবং বড় মেয়ে। নিয়তিদেবীর দাবি, মাঝরাতে চাপা গলায় কথাবার্তার শব্দে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। দেখেন একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন জন। মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা। নিয়তিদেবীর দাবি, ডাকাতেরা চিৎকার করলে গুলি করে দেওয়ার ভয় দেখায়। তাঁকে এবং নীলাঞ্জনাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের ঘরে।

বৈদ্যনাথবাবুর দাবি, ঘরের মধ্যে শব্দ পেয়ে ততক্ষণে তাঁরও ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ডাকাতেরা তাঁকেও প্রাণে মারার ভয় দেখায়। তিনি, তাঁর শ্যালক ও বড় মেয়েকে পিছমোড়া করে বেঁধে উপুড় করে বিছানায় ফেলে দেয় ডাকাতেরা। উপর থেকে লেপ চাপা দিয়ে তাঁদের ঢেকে ফেলা হয়, যাতে কিছুই দেখতে না পান। তার আগেই সবার মোবাইল ফোন নিয়ে বন্ধ করে দেয় ডাকাতেরা। তবে বার বার গুলি করার ভয় দেখালেও ডাকাতদের তিন জনের কারও হাতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র তাঁরা দেখেননি বলেই বৈদ্যনাথবাবু এবং নিয়তিদেবী দাবি করেছেন।

Advertisement

নিয়তিদেবী জানান, ঘরে বড় কোনও আলো জ্বালাতে দেয়নি ডাকাতেরা। তিনি ভয়ে আলমারির চাবি দিয়ে দিলেও সেটি তাদের হাত থেকে কোথাও পড়ে গিয়েছিল। নাইট বাল্বের আলোয় আলমারি ভেঙে ফেলে ডাকাতেরা। আতঙ্কে তখন থরথর করে কাঁপছিল নীলাঞ্জনা।

প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতেরা। যাওয়ার আগে হুমকি দিয়ে যায়, ডাকাতি নিয়ে বেশি হইচই করলে ফের এসে ঘরে আগুন দিয়ে যাবে। পরে পড়শিরা এসে দরজা খুলে বৈদন্যাথবাবুদের উদ্ধার করেন।

ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার সকালে এলাকায় যায় পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। ওই বাড়িতে তদন্তে গিয়ে দেখা যায়, রান্নাঘরের গ্রিল ভাঙা। সেখান দিয়েই ডাকাতেরা ঘরে ঢুকেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। পরে পুরুলিয়া মফস্সল থানার পুলিশও তদন্তে যায়। জেলা পুলিশের একটি সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত কোন থানা ঘটনার তদন্ত করবে তা নিয়ে এ দিন কিছুটা টানাপড়েন চলে। সোমবার রাতে পুরুলিয়া মফস্সল থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের হয়।

জেলার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, আইনের পরিভাষায় পাঁচ জনের কম ব্যক্তি মিলে যদি লুঠপাট করেন তাহলে সেটিকে ডাকাতি বলা হয় না। এই দিন পুরুলিয়ার এসপি জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘একটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তিনজন বাড়িতে ঢুকেছিল। আমরা ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন