বিতর্ক উস্কে মৃত্যু হল মানবাজারের রাস্তায় পড়ে থাকা সেই বৃদ্ধার

শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

Advertisement

সমীর দত্ত

মানবাজার শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫৬
Share:

মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সে অসুস্থ বৃদ্ধা। বুধবার সন্ধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।

বিতর্ক আরও বাড়িয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে মৃত্যু হল অসুস্থ বৃদ্ধার। স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায় মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করেন এসডিও সঞ্জয় পাল। ভর্তি করানো হয় মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

Advertisement

এ দিকে, মানবাজার থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধাকে আগেই উদ্ধার করে একই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের দাবি, মানবাজারের জবলা গ্রামে এক ভবঘুরে বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছেন বলে খবর এসেছিল। তার পরেই তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িতে চড়িয়ে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘১২ অগস্ট সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ওই বৃদ্ধাকে বাইরে ছেড়ে দিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার পরে তিনি এলাকাতেই ঘোরাফেরা করছিলেন। ১৫ আগস্ট প্রশাসনের কর্তাদের নজরে পড়ে।’’ এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে গুরুত্ব বুঝিয়ে বলা হলে পুলিশই ওই বৃদ্ধাকে অন্য কোথাও নিয়ে যেত।’’

তবে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়নি বলেই দাবি করছে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিএমওএইচ (মানবাজার) রামকৃষ্ণ হেমব্রম বলেন, ‘‘পুলিশ কেন এ রকম দাবি করছে জানি না। ১২ অগস্ট সন্ধ্যায় কে ডিউটিতে ছিলেন খোঁজ নিচ্ছি।’’ তিনি জানান, ওই বৃদ্ধা সেপটিসিমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। পায়ের পাতায় ক্ষত মারাত্মক আকার নিয়েছিল। রোগ প্রতিরোধের করার ক্ষমতা ছিল না। শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ পাঠানো হয়েছে। পুরুলিয়ার সিএমওএইচ অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘কী হয়েছিল খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

Advertisement

মৃত বৃদ্ধা হিন্দিভাষী ছিলেন। তবে তাঁর নাম বা পরিচয় কিছুই এখনও জানা যায়নি। ১৫ অগস্ট সন্ধ্যায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন এসডিও (মানবাজার) সঞ্জয় পাল, বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার এবং মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৃদুল শ্রীমানি। প্রশাসন সূত্রের খবর, কর্তারা ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছিলেন, ছেলেরা মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কয়েক দিন ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া জোটেনি তাঁর। বিডিও মানবাজার (১) বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছিলাম। হাসপাতাল থেকে বলেছিল, চিকিৎসার জন্যে বাইরে পাঠাতে হতে পারে। হঠাৎ এ ভাবে মারা যাবেন বুঝতে পারিনি।’’

শনিবার এসডিও বলেন, ‘‘বাইরে আছি। খবরটা শুনলাম। সোমবার গিয়ে খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন