অভিযোগই সার, কিনারা হয় না চুরির

দিন দুপুরে কখনও রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের নাতির বাড়িতে চুরি। কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলীর বাড়িতে চুরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫৩
Share:

বয়ান: চুরির কথা বলছেন শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

দিন দুপুরে কখনও রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের নাতির বাড়িতে চুরি। কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলীর বাড়িতে চুরি। একের পর এক চুরির ঘটনায় আতঙ্ক শান্তিনিকেতনে। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ এলাকায়। তাঁদের দাবি, ‘‘নেতা-মন্ত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর সঙ্গে সঙ্গে এ বার এলাকায় অন্তত দু’একটি চুরির কিনারা করুক পুলিশ।’’

Advertisement

শান্তিনিকেতনে শিল্পী, সাহিত্যিক, আইনজীবীর বাড়িতে চুরি নতুন নয়। বিশ্বভারতীর ছাত্রীদের ব্যাগ ছিনতাই ঘটনাও লেগেই রয়েছে। মঙ্গলবার ভুবনডাঙা লজমোড়ের কাছে একটি দোকানের টিনের ছাদ কেটে ল্যাপটপ ও একাধিক মোবাইল চুরির অভিযোগ উঠেছে। গত দিন দশেক ধরে বাড়ি, মন্দির, দোকানের মতো একাধিক জায়গায় পর পর চুরির ঘটনাও ঘটছে। এবং প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের নাতির বাড়িতে ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলীর বাড়িতে চুরিও ঘটেছে এর মধ্যেই। এর একটি কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। স্বাভাবিক কারণেই ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়।

চলতি মাসের ১৭ তারিখ বোলপুরের লজমোড় লাগোয়া প্রভাত সরণিতে রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের নাতির বাড়িতে চুরির খবর জানাজানি হয়। ঠিক কি কি জিনিষ চুরি গিয়েছে, তা এখনও জানা না গেলেও চোরেরা চারটি তালা ভেঙে এবং বাড়ির ৭টি ঘরের আলমারি খুলে সমস্ত আসবাব তচ্ছনচ্ছ করে যায়। বুধবার সন্ধ্যায় প্রয়াত প্রভাতবাবুর নাতি, প্রিয়দর্শী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী, শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সঠিক কি কি চুরি গিয়েছে বলতে পারছি না। তবে টুরিস্ট লজের সামনের মতো ব্যস্তবহুল এলাকায় বাড়ি থেকে চুরি ভাবা যায় না!’’

Advertisement

তাঁর দাবি, ‘‘চোরেরা গোটা ঘর তছনছ করেছে। এমনকী বিছানা, চাদর সব নীচে নামিয়ে খুঁজেছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে তাঁরা এই কাজ নির্বিচারে করেছে।’’

জানা গিয়েছে, পরিবারের অনুপস্থিতিতে, ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার ঝর্ণা বিবি থাকতেন। তিনি বলেন, ‘‘দুপুর দুটো পর্যন্ত থাকি, আবার রাতে ফেরা হয়। ওই দিন রাতে ছেলে রোহিত ওই বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে ঘটনার কথা জানতে পারে।’’

স্থানীয় বাঁধগোড়া কালীকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র রোহিত বলে, ‘‘বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখি সদর দরজার দুটি গ্রিলের তালা ভাঙা। ঘরের দরজা ভিতর থেকে লাগানো। পায়ের শব্দ আসছিল ভিতর থেকে। ভয়ে বেরিয়ে গিয়ে মাকে জানাই।’’

চুরির ঘটনার কথা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সেলার সুকান্ত হাজরার মারফত যায় থানায়। রাতেই পুলিশ এসে ঘটনাস্থল ঘুরে যায়। মুখোপাধ্যায় পরিবারের দাবি, এরপরে অবশ্য আর কিছু এগোইনি। দিন চারেক পরে বোলপুর থানায় ঘটনার কথা লিখিত ভাবে জানায় তাঁর পরিবার। তাঁদের দাবি, চুরির ঘটনার দিন দুয়েকে পরে ফের দু’জন ওই চত্বরে দুপুরেও ঢুকেছিল। জানতে চাওয়ায় অবশ্য, গাছ থেকে বেল পেড়ে নেওয়ার কথা জানায়। ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে, শ্রীনিকেতনের কালিসায়র লাগোয়া এলাকায় মনোজ মুরলীর বাড়িতে চুরি হয়। তিনি বলেন, ‘‘চোরেরা গোটা ঘর তছনছ করেছে। নিছক চুরি নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারছি না। আমার কিছু স্মারক-পুরস্কার খোওয়া গিয়েছে। কিছু রুপোর গয়নাও উধাও।’’ মঙ্গলবার লজমোড় এলাকার দোকানদার সুমন মাঝি বলেন, ‘‘দিন দুপুরে ১৩টি মোবাইল চুরি হল। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও কোনও খবর নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন