প্রহরারত চার সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে স্কুলের কম্পিউটার চুরি করে পালাল দুষ্কৃতীরা।
শনিবার গভীর রাতে রামপুরহাট থানার শালবাদরা হাইস্কুলের ঘটনা। ঘটনার খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কথাবার্তায় বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভূমিকাও।
এ বছর সে রকম কোনও ঘটনার কথা প্রকাশ্যে না হলেও গত দেড় বছরে বীরভূম, বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার চুরির ঘটনা চলছিলই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ চোরেদের গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার করা যায়নি চুরি যাওয়া সামগ্রীও। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে চিন্তিত বহু স্কুল কর্তৃপক্ষই। শালবাদরা হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক গৌতম মণ্ডল রবিবার বলেন, ‘‘গভীর রাতের ঘটনা হলেও ওই সিভিক ভলান্টিয়ারেরা আমাকে এ দিন সকালে পৌনে ৮টা নাগাদ চুরির খবর দেন। খবর পেয়ে আমি পুলিশকে জানাই।’’ স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা স্কুলের দোতলায় ওঠার সিঁড়ির একটি তালা ভেঙে কম্পিউটার ল্যাবে ঢুকেছে। সেখানেও তালা ভেঙে দু’টি কম্পিউটার এবং কিছু যন্ত্রাংশ চুরি করেছে।
এ দিকে, প্রহরারত সিভিক ভলিন্টিয়ারদের অন্যতম তৌহিদ আনসারির দাবি, স্কুলের দোতলায় কম্পিউটার ঘরের পাশে তাঁরা পাহারা দিচ্ছিলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ দু’জন দুষ্কৃতী তাঁদের পিস্তল জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে আটকে রাখে। তাঁর দাবি, ‘‘পাশে কম্পিউটার রুমের তালা ভাঙার আওয়াজ পেয়েও ওদের হুমকির ভয়ে কিছু করতে পারিনি। ওরা ভোর পৌনে ৫টা পর্যন্ত আমাদের আটকে রেখেছিল। পরে স্কুলের পিছন দিকের রাস্তা দিয়ে ওরা পালিয়ে যায়।’’ সিভিক ভলান্টিয়ারদের বর্ণনা অনুযায়ী, দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ। আনুমানিক বয়স ৩০-৩২। প্রত্যেকের মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, চার জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দুষ্কৃতীরা কী করে এত সহজে কাবু করে ফেলল। দুষ্কৃতীরা চুরির উদ্দেশ্যে এলেও তারা কেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোবাইল নিলেন না। সব থেকে বড় প্রশ্ন, চুরির ঘটনার খবরই বা প্রধান শিক্ষককে কেন এত দেরিতে দিলেন তৌহিদরা? তাঁদের দাবি, দুষ্কৃতীদের আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে তাঁরা অসহায় ছিলেন। আর ঘটনার খবর তাঁরা দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার পরে ভোরেই দিয়েছিলেন।
ঘটনা হল, দিন দশেক আগেই শালবাদরার অদূরে কাষ্টগড়ায় দিনের বেলায় ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তার পরেই এ দিনের স্কুলে কম্পিউটার চুরির ঘটনা। পর পর এমন অপরাধের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী।