ঝালদায় পুরবোর্ড গড়ল তৃণমূল

বছর ঘুরতেই ছবিটা বদলে গেল। একটি আসন না জিতেও কংগ্রেস পরিচালিত ঝালদা পুরসভায় বোর্ড গড়ল তৃণমূল। এর ফলে পুরুলিয়ার তিন পুরসভাই শাসকদলের দখলে চলে এল। শনিবার বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থী পিন্টু চন্দ্রকে ৮-৪ ভোটে হারিয়ে ঝালদার নতুন পুরপ্রধান হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুরেশ অগ্রবাল। গত বছর পুরনির্বাচনে ঝালদায় কোনও আসন পায়নি তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share:

জয়ের পরে সুরেশ অগ্রবাল। —নিজস্ব চিত্র।

বছর ঘুরতেই ছবিটা বদলে গেল। একটি আসন না জিতেও কংগ্রেস পরিচালিত ঝালদা পুরসভায় বোর্ড গড়ল তৃণমূল। এর ফলে পুরুলিয়ার তিন পুরসভাই শাসকদলের দখলে চলে এল।

Advertisement

শনিবার বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থী পিন্টু চন্দ্রকে ৮-৪ ভোটে হারিয়ে ঝালদার নতুন পুরপ্রধান হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুরেশ অগ্রবাল। গত বছর পুরনির্বাচনে ঝালদায় কোনও আসন পায়নি তৃণমূল। কিন্তু, সম্প্রতি সাত বিরোধী ও নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়ে ওঠে। সুরেশবাবু নির্দল প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন। শনিবারের পুরপ্রধান নির্বাচনে দলত্যাগী সাত জন ছাড়াও বিরোধী শিবিরের আরও এক কাউন্সিলরের ভোট গিয়েছে তৃণমূলের পক্ষে। তবে, গোপন ব্যালটে ভোট হওয়ায় সেই কাউন্সিলরের পরিচয় জানা যায়নি। তৃণমূল শিবিরের দাবি, কংগ্রেসের কোনও কাউন্সিলরের ভোট তাঁরা পেয়ে থাকতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।

এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পুরপ্রধান নির্বাচনের সভা শুরু হয়। পুরসভার সামনে ভিড় করেছিলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। ছিলেন বাম ও কংগ্রেস সমর্থকেরাও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বড় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল পুরসভার বাইরে। গোলমালের বদলে অবশ্য দেখা গিয়েছে সৌজন্যের নজির। নির্বাচনের পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সদ্য অপসারিত পুরপ্রধান, কংগ্রেসের মধুসূদন কয়াল। তাঁকে নিজের মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেন দলত্যাগী কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা বর্তমানে পুরসভায় তৃণমূলের অন্যতম নেতা প্রদীপ কর্মকার।

Advertisement

গত পুরনির্বাচনে ঝালদার ১২টি আসনের মধ্যে ৭টি জিতে বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। কিন্তু বছর গড়ানোর আগেই কংগ্রেসের চার, ফরওয়ার্ড ব্লকের এক এবং দুই নির্দল কাউন্সিলরকে নিজেদের দিকে টেনে নেয় তৃণমূল। ফলে, তৃণমূলের দখলে চলে আসে ৭টি আসন। ওই ৭ কাউন্সিলর অনাস্থা আনেন পুরপ্রধান মধুসূদনবাবুর বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অনাস্থা বৈধ নয় দাবি করে তলবি সভায় স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন মধুসূদনবাবু। আদালতে মামলাটি এখনও বিচারাধীন থাকলেও স্থগিতাদেশ মেলেনি। উপ-পুরপ্রধান, কংগ্রেসের মহেন্দ্রকুমার রুংটা সম্প্রতি তলবি সভা ডাকলে তাতে অপসারিত হন মধুসূদনবাবু।

এ দিন পুরবোর্ড গঠনের পরে তৃণমূলের কাউন্সিলররা দাবি করেছেন, ঝালদার উন্নয়নের স্বার্থেই তাঁরা শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। নব নির্বাচিত পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘আমাদের এ বার প্রথম কাজই হল স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরানো।’’ ঝালদা পুরসভা দখলে সক্রিয় ছিলেন প্রদীপ কর্মকার। তাঁর দাবি, ঝালদা শহরে সুবর্ণরেখা নদী থেকে পাইপবাহিত জল প্রকল্প গড়ার জন্য পদক্ষেপ করবেন তাঁরা। শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানজটের সমস্যা দূর করা-সহ নাগরিক পরিষেবা উন্নত করার লক্ষ্যে পুরবোর্ড কাজ করবে।

যদিও অপসারিত পুরপ্রধান মধুসূদনবাবুর কটাক্ষ, ‘‘ঝালদার যদি ওঁরা উন্নতি করতে পারেন, আমাদের শুভেচ্ছা থাকবে। তবে ওই ৭ কাউন্সিলরের মধ্যে দু’জনই প্রাক্তন পুরপ্রধান। ওঁরা পুরপ্রধান হিসেবে কেমন কাজ করেছিলেন, ঝালদার মানুষ তা ভালই জানেন।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘তৃণমূল যে ভাবে ঝালদা দখল করল, সেটা গণতন্ত্রের সমাধি। অর্থ ও বিভিন্ন প্রলোভনে কংগ্রেসের প্রতীকে জেতা কাউন্সিলররা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ক্ষমতা থাকলে তাঁরা পদত্যাগ করে তৃণমূলের প্রতীকে জিতে দেখান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন