ব্যারিকেড: কড়া নিরাপত্তায় সভার পথে অভিষেক। নিজস্ব চিত্র
লক্ষ্যই ছিল বড়সড় জমায়েত। ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার উপচে পড়া ভি়ড় দেখিয়ে দিল তাতে উতরে গিয়েছে তৃণমূল।
সভার অন্যতম দুই উদোক্তা রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি ও যুব তৃণমূলের সভাপতি সুশান্ত মাহাতোর দাবি, সোমবারের সভায় আশি হাজারের বেশি জমায়েত হয়েছে। পুলিশের হিসেবে সংখ্যাটা হাজার পঞ্চাশেক। ভিড় দেখে হাসি চওড়া হয়েছে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। সোমবার রঘুনাথপুরের এটিম ময়দানে বক্তৃতার শুরুতেই অভিষেক বলেন, ‘‘আজকের সভা তো জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন কড়া নাড়ছে। বিজেপির রাজ্য নেতারা ঘনঘন পুরুলিয়া এসে সভা করছেন। এই সময়ে দাঁড়িয়ে বড় সড় জমায়েত করে তৃণমূলের তরফে একটা বার্তা দেওয়ার তাগিদ ছিলই। তা ছাড়া জেলায় দীর্ঘ সময় বড় মাপের সভা হয়নি শাসকদলের। আগ্রহটা ছিল সেখানেও। সব মিলিয়ে দলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষকের সভাকে পুরোপুরি সফল করতে আদাজল খেয়ে উঠে পড়েছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতারা। রঘুনাথপুর শহরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম সভা হওয়াতে বাড়তি দায়িত্ব পালন করেছেন এই এলাকার নেতাকর্মীরা। তারই নিট ফল ভিড়ে ঠাসা সভা। জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘সরকারে আসার পরে মানুষের প্রত্যাশা পূর্ণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের প্রতি মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে। তারই ফল সোমবারের সভায় উপচে পড়া ভিড়।”
দুপুর তিনটে থেকে সভা শুরুর কথা ছিল। একটা থেকেই জমতে শুরু করে ভিড়। রঘুনাথপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক মিছিল সভায় ঢোকে। অভিষেক বেলা চারটে নাগাদ যখন সভায় এসেছেন, তখনও মিছিল ঢুকতে দেখা গিয়েছে। বিধায়ক পূর্ণচন্দ্রবাবুর দাবি, ‘‘অন্তত হাজার দশেক লোক বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনেছেন।” সভায় শুধু বক্তৃতা করাই নয়, সভা শেষে জনসংযোগও সারেন যুব তৃণমূলের সভাপতি। বক্তৃতা শেষে সরাসরি গাড়িতে না উঠে মাঠ থেকে বেরিয়ে পুরুলিয়া-বরাকর রাস্তা দিয়ে হাঁটতেও শুরু করেন। কিছুটা হেঁটে হাত মিলিয়ে তবে গাড়িতে ওঠেন।
ভিড়ে ঠাসা সভায় বিজেপির উদ্দেশে তোপ দাগেন অভিষেক। দলের নেতাদের প্রতিও ছিল বার্তা। তাঁর কথায়, ‘‘কর্মীদের আরও নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তুলতে হবে। মানুষের বিপদে আপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।” অভিষেক ঢোকার আগে সভামঞ্চ থেকে স্লোগান ওঠে, ‘‘তৃণমূল দিচ্ছে ডাক, বিজেপি নিপাত যাক।’’ অভিষেক অবশ্য বিজেপির সঙ্গে বামেদের একই সারিতে রেখেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘যাঁরা আগে লাল পাঞ্জাবি পরে ঘুরে বেড়াতেন, এখন পদ্ম হাতে ঘুরছেন। যাঁরা সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলছেন, তাঁদের রাজনৈতিক ভাবে জবাব দিতে হবে।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব ভয় পেয়েই এমন কথা বলছে বলে মনে করেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের প্রতি আমজনতার জনসমর্থন বাড়ছে। তা দেখেই তৃণমূল ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।”