TMC-BJP Conflicts

ভাগাভাগির চেষ্টা করছে বিজেপিই, দাবি অভিষেকের

উন্নয়নের প্রশ্নেও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তুলনা টানেন। ঘটনাচক্রে এই বাঘমুণ্ডিতেই বাড়ি পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ০৯:০০
Share:

সারেঙ্গাতে অভিষেক। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়।

আদিবাসী ও কুড়মিদের মধ্যে ‘ভাগাভাগি’ তৈরির জন্য খাতড়ায় এসে ক’দিন আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছিলেন বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বাঘমুণ্ডির কালিমাটিতে তার পাল্টা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, ‘‘কুড়মি ও আদিবাসীদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। এই দলকে কি আপনারা নির্বাচনে ভোট দেবেন? কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দিন।’’

Advertisement

অভিষেক দাবি করেন, তৃণমূল সরকার কিন্তু সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভাগাভাগি করে না। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল পরাজিত হলেও বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের লোকজন বলতে পারবেন যে তারা রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না? আমরা সবার ঘরে উন্নয়ন পৌঁছে দিচ্ছি। এটাই মানবিক সরকার।’’

উন্নয়নের প্রশ্নেও তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তুলনা টানেন। ঘটনাচক্রে এই বাঘমুণ্ডিতেই বাড়ি পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর। তাঁর নাম করে অভিষেক বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরির দাবিতে তৃণমূলের সাংসদেরা সরব হয়েছেন। কিন্তু এক দিনের জন্যেও লোকসভায় বিজেপির সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর কোনও আওয়াজ পাওয়া যায়নি। বিজেপির পুরুলিয়ার সাংসদ এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। গত চার বছরে এক দিনও তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াননি। জেলার উন্নয়নে চার বছরে কোনও বৈঠক পর্যন্ত করেননি।’’

Advertisement

অভিষেকের দাবি, কেন্দ্রে মোদী সরকার থাকলেও পুরুলিয়ায় তৃণমূলের সাংসদ থাকাকালীন একশো দিনের কাজের টাকা আটকায়নি। কিন্তু জেলা থেকে ছ’জন বিজেপির বিধায়ক হওয়ার পরেই কেন্দ্র টাকা আটকে দিয়েছে।

বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় ফোন ধরেননি। তবে বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা দাবি করেন, ‘‘আমাদের পাল্টা প্রশ্ন, তৃণমূল কি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী? মানুষের নির্বাচিত বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের বৈঠকে ডাকা হয় না কেন?’’ তাঁর দাবি, তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির কারণেই একশোর দিনের প্রকল্পের টাকা আসা বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের পঞ্চায়েত গড়ব। মানুষ সব প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

অভিষেক দাবি করেন, ‘‘গতবার এখানে ৬০-৬৫টা পঞ্চায়েতে বিজেপি জিতেছিল। কী কাজ হয়েছে? তুলনা করুন। চোখে দেখে ভোট দিন।’’ পুরুলিয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে অভিষেক দাবি করেন, ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে। গত ১১ বছরে পূর্ত, সেচ, পঞ্চায়েত এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়নমুখী নানা প্রকল্প রূপায়িত করেছে। বিজেপির সঙ্গেই সিপিএম, নির্দল, কংগ্রেসকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘বিদায়’ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাঘমুণ্ডি থেকে সারেঙ্গায় কপ্টারে উড়ে যান অভিষেক। সারেঙ্গা বাজার হয়ে মিশন মাঠ পর্যন্ত রোড-শো করেন। মিনিট কুড়ির মধ্যে রোড-শো সেরে জেলা ছাড়েন তিনি। অনেকে রোড-শো শেষে অভিষেক বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করলেও তা হয়নি। এ দিন দুপুর থেকেই জেলার আবহাওয়া ছিল খারাপ। তার জন্য কর্মসূচি দীর্ঘায়িত করেননি বলে দাবি দলের একাংশের।

বাঘমুণ্ডি ও সারেঙ্গায় তৃণমূলের দুই কর্মসূচিতেই ভাল ভিড় দেখা গিয়েছে। তবে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকের তুলনায় পুলিশের সংখ্যাইছিল বেশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন