আক্রান্ত: সুমন দত্ত। নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলা শুরুর আগের দিন টোটোচালকের ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠল শান্তিনিকেতনে। অভিযোগ, বচসা, হাতাহাতির পরে এক ট্যুর-গাইডের নাকে ধারাল অস্ত্রে কোপ মারা হয়।
শান্তিনিকেতনে পৌষমেলায় আগামী ছ’দিনে কয়েক লক্ষ পর্যটক আসবেন। মেলায় যেতে তাঁদের বেশিরভাগেরই ভরসা টোটো। তার ২৪ ঘণ্টা আগে এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ শহরবাসী। ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সকালে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমন দত্ত নামের এক ট্যুর গাইড এক দল পর্যটককে শান্তিনিকেতন ঘোরাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় এক টোটোচালক সেখানে গিয়ে ওই পর্যটকদের তাঁর টোটোয় উঠতে বলেন। সেখান থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। সুমনবাবুর অভিযোগ, ওই চালক জোর করে পর্যটকদের তাঁর টোটোয় ওঠার কথা বলেন। পর্যটকেরা বিরক্ত হচ্ছিলেন। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, হাতাহাতির সময়েই আচমকা ওই চালক টোটো থেকে একটি ভোজালি বের করে সুমনবাবুর নাকে আঘাত করেন। জখম হয়ে হাসপাতালে যাওয়া পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, শান্তিনিকেতন জুড়ে টোটোচালকদের দৌরাত্ম্য নতুন বিষয় নয়। সম্প্রতি কিছু টোটোচালক ট্যুর গাইডের কাজ করছেন। অভিযোগ, তাতে একাধিক ভুল তথ্য জানছেন পর্যটকেরা। এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কড়া হস্তক্ষেপের আবেদন করেছেন পুরনো গাইডরা। তাঁদের দাবি, ওই টোটোচালকদের বেশিরভাগই আশপাশের গ্রাম থেকে ভিড় করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলার মরসুম শুরু হতেই টোটোচালকদের দাপট বেড়েছে। এক জনকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছেন না তাঁরা। দু’জন হলেও ভাড়া অনেক বেশি। এক স্থানীয় জানালেন, যে রাস্তা অন্য সময় ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে যাওয়া যায়। এখন ১০০ টাকা দিলেও টোটোচালকরা নিয়ে যাবেন না। এক জন যাত্রী টোটোতে তুলছেন না তাঁরা। স্টেশনে লোক নামছে। শিশু সহ একসঙ্গে ছয়-সাত জন যাত্রী তুলে তাঁরা যাচ্ছেন শান্তিনিকেতনের পথে।
বোলপুর টোটোচালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোপাল হাজরা জানান, বর্তমানে ইউনিয়নভুক্ত টোটোর সংখ্যা এবং ইউনিয়নে না থাকা টোটোর সংখ্যা প্রায় সমান। মাঝেমধ্যেই পর্যটকদের হেনস্থার নালিশ তাঁদের কানে আসে। কিন্তু অভিযুক্তেরা ইউনিয়নভুক্ত না হওয়ায় কিছু করার থাকে না। এ দিনও যে টোটোচালক এমন কাণ্ড করেছেন, তিনি ইউনিয়নভুক্ত চালক নন বলেই জানান গোপালবাবু। তবে ধারাল অস্ত্রে আঘাত করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টোটোচালক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাউকে মারি নি। বরং আমাকেই মার খেতে হয়েছে।’’