Vendors

উঠতে না পারায় ক্ষোভ হকারদের

আদ্রার বেনিয়াসোলের বাসিন্দা ধনরাজ কুমার ট্রেনে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। তাঁর বাবা প্রমোদ কুমারও ট্রেনে চা বিক্রি করেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:০০
Share:

ট্রেন চালু হলেও আদ্রা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বন্ধ দোকান। ছবি: সঙ্গীত নাগ

আশা ছিল, ট্রেন চলাচল শুরু হলে রোজগারের একটা হিল্লে হবে। কিন্তু ট্রেন চালু হওয়ার দিনে স্টেশনেই ঢুকতে পারলেন না হকার এবং প্ল্যাটফর্মের খাবারের দোকানদারেরা। দিনের শেষে, আক্ষেপ ঝরে পড়েছে তাঁদের গলায়। রেল সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতিতে যে সমস্ত সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাতেই স্থির হয়েছে, ট্রেনে চাপবেন না হকারেরা। খুলবে না স্টেশনের দোকানগুলিও।

Advertisement

আদ্রার রেলবস্তির বাসিন্দা মনোজ রাই দীর্ঘদিন ধরে আদ্রা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ও ট্রেনে চপ-শিঙাড়া বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, মার্চের শেষে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তীব্র আর্থিক অনটন শুরু হয় তাঁর ছ’জনের সংসারে। মনোজবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে কয়েক মাস আশা ছিল, ট্রেন চলবে। সব স্বাভাবিক হবে। অপেক্ষা করতে করতে শেষে দিনমজুরি শুরু করি। প্রতিদিন কাজ জোটে না। এত দিন পরে ট্রেন চলল, কিন্তু আরপিএফ স্টেশনে ঢুকতে দিল না।’’

আদ্রার বেনিয়াসোলের বাসিন্দা ধনরাজ কুমার ট্রেনে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। তাঁর বাবা প্রমোদ কুমারও ট্রেনে চা বিক্রি করেন। ধনরাজ বলেন, ‘‘দিনমুজরির কাজ প্রতিদিন জোটে না। তা ছাড়া ওই কাজের অভ্যাসও নেই। ট্রেন চালু হবে শুনে অনেক দিন পরে আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু তাতে জল ঢেলে দেওয়া হল।’’

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনে খাবার বিক্রি করে সংসার চালানো লোকজন অন্য পেশায় গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বলে জানান আদ্রার আড়রা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের তুফান রাই। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন বন্ধ থাকায় বিকল্প রোজগারের উপায় হিসাবে হকারদের একশো দিনের কাজে মাটি কাটার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা সেই কাজে আদৌ অভ্যস্ত নন।” স্বাস্থ্য-বিধি মেনে ট্রেনে খাবার বিক্রি শুরু হলে, তেমন অনেকের রোজগারের সুরাহা হবে বলে মনে করছেন তিনি।

বাঁকুড়ার ছাতনার বুধন কর্মকার, ভবেশ মণ্ডল, বৈদ্যনাথ শতপথীরা কেউ ট্রেনে চা বিক্রি করেন, কেউ ঝালমুড়ি। ট্রেন চলবে শুনে কম করেই চা-ঝালমুড়ি বানিয়ে স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘লোকাল ট্রেনে লোকজন গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে যাচ্ছে। বাজারহাটে সমস্ত খাবারের দোকন খুলে গিয়েছে। শুধু আমাদের ট্রেনে চাপা নিষেধ। এই যুক্তি মেনে নেওয়া যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন