বাস কম, জমল না বাজার

দূরের ক্রেতারা সাধারণত সকালের দিকে বাজারে আসেন। কিন্তু এ দিন বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য বহু বাস রাস্তায় নামেনি। ফলে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতাদের ভিড়ের দেখা মেলেনি। আবার সকালের দিকে গরম তীব্র হওয়ায় শহরাঞ্চলের ক্রেতারাও তেমন বাজারমুখো হননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share:

বাঁকুড়ার মাচানতলা এলাকায়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

দিনভর বাজারে ভিড়, দোকানের ভিতরে তিল ধারনের জায়গা নেই— পুজোর মাসের শুরু থেকে প্রায় রোজই এই ছবিটাই চলে আসছিল বাঁকুড়ায়। তাতে ছেদ পড়ল রবিবার। বিশ্বকর্মা পুজোয় পথে গাড়ি কম থাকায় দূরের ক্রেতারা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শহরে আসতেই পারলেন না। তাই বহু দোকানিই ক্রেতার অভাবে বিকেল পর্যন্ত কার্যত হাত কামড়ালেন। পুজোর মুখে ছুটির দিনের বাজারের এমন উল্টো চিত্রে আক্ষেপ ঝরছে ব্যবসায়ীদের গলায়।

Advertisement

দূরের ক্রেতারা সাধারণত সকালের দিকে বাজারে আসেন। কিন্তু এ দিন বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য বহু বাস রাস্তায় নামেনি। ফলে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতাদের ভিড়ের দেখা মেলেনি। আবার সকালের দিকে গরম তীব্র হওয়ায় শহরাঞ্চলের ক্রেতারাও তেমন বাজারমুখো হননি।

যদিও সন্ধ্যার পরে শহরের মানুষের ভিড়ে পরিচিত ছবিটা অনেকটাই ফিরে এসেছিল জেলা সদর বাঁকুড়ার বাজারের। বাঁকুড়ার সুভাষ রোডের একটি প্রথম শ্রেণির রেডিমেড জামাকাপড়ের দোকানের মালিক রুমেলা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুজোর আগের রবিবারগুলো আমাদের কাছে বড় ভরসা। তবে এ বার বিশ্বকর্মা পুজো পড়ে যাওয়ায় সকালের দিকে একেবারেই ভিড় হয়নি। হাতে আর একটিই রবিবার। ওই দিনটি কেমন যায় সেটাই দেখার।’’ ওই এলাকারই অন্য একটি প্রথম শ্রেণির রেডিমেড দোকানের মালিক বিশ্বরূপ সেন বলেন, ‘‘পুজোর বাজার এ বার দারুণ জমে উঠেছে। প্রতি দিনই ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। তীব্র গরমেও মানুষ চুটিয়ে কেনাকাটা করছেন। তবে এ দিন এক বেলা ব্যবসা মার খেয়েছে।’’

Advertisement

পুরুলিয়ার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরের দিকে আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামায় বাজার খানিকটা মার খেয়েছিল। তাই রবিবার ছুটির দিনে বাজারে ভিড় উপচে পড়বে বলেই তাঁরা আশা করেছিলেন। কিন্তু তেমন ভিড় হয়নি। পুরুলিয়া শহরের বরাকর রোডের ব্যবসায়ী অশোক সারাওগি বলেন, ‘‘রবিবার, তার উপরে বিশ্বকর্মা পুজো বলে যে রকম বাজার আশা করেছিলাম, সে রকম হল না। বিশ্বকর্মা পুজো বলে এ দিন বিভিন্ন রুটে তেমন বাসও চলেনি। বিক্রিবাটা হচ্ছে তবে পুজোর আগের রবিবার বলে যে রকম আশা ছিল, তা পূরণ হয়নি।’’ দেশবন্ধু রোডের শপিং মলের ব্যবসায়ী কুণাল সাও জানান, ব্র্যান্ডেড পোশাকের এখনও তেমন চাহিদা ওঠেনি। রবিবার বাজার জমার আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আশা পূরণ হল না।’’ শহরের কাপড়গলি এলাকার ব্যবসায়ী সুবীর সেনেরও সেই একই আক্ষেপ।

তবে বাঁকুড়ার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, চলতি সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই বাজারে কেনাকাটার ভিড় জমে উঠেছে। ভাদ্র মাসের তীব্র গরমকে উপেক্ষা করেই দিনভর শহর ও বাইরে থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় লেগেই রয়েছে বাজারে। রবিবারের বাজার তুলনামূলক ভাবে ফাঁকা গেলেও ফের সেই ভিড় ফিরে আসবে বলেই আশাবাদী ব্যবসায়ী মহল। বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, ‘‘জিএসটি-র কারণে বাজার কেমন যাবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রিটার্ন ফাইল করার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন ব্যবসায়ীরা। পুজোর বাজারও বেশ জমে উঠেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন